ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

নিরক্ষরতা নারীদের দুর্বলতার প্রধান কারণ

সুমন পারভেজ, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৬
নিরক্ষরতা নারীদের দুর্বলতার প্রধান কারণ

বিশ্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। উন্নত, উন্নয়শীল, অনুন্নত- সব দেশেই যদি নারীদের প্রতিটি ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করা না যায় তাহলে অর্থনৈতিক এবং সামাজিকসহ নানা বিষয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।

সঙ্গত কারণেই আমাদের দেশও এই নীতির ব্যতিক্রম নয়।

উন্নয়শীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৯ শতাংশ এই বিশাল অংশ নারীকে অবহেলার বা পেছনে ফেলে রাখার কোনো সুযোগ নেই। তাই দেশের এই অর্ধেক জনশক্তিকে আমাদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। যা একান্ত জরুরি।

তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আমাদের দেশের নারী সমাজ নিরক্ষতার কারণে নিজেদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং সমাজের উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাদের দুর্বলতা কাজ করছে। আমরা যতই নারী নেতৃত্বে কথা বলি না কেন, গ্রাম পর্যায়ে নারী শিক্ষার হার এখনও আশানরূপ নয়।

বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের শিক্ষার হার পুরুষদের তুলনায় অনেক কম। গ্রাম অঞ্চলের বিশাল নারী সমাজ নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে শুধুমাত্র তাদের শিক্ষার অভাবে। অথচ আমাদের দেশের প্রচলিত রাষ্টীয় যে বিধি-বিধান নারীদের জন্য দেওয়া হয়েছে তা সঠিকভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না। এর মূল কারণ নারীদের শিক্ষা ও সচেতনতার অভাবে তারা প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা বা আইনের সহায়তাগুলোও গ্রহণ করতে পারছে না। নারীদের জন্য বিয়ের ক্ষেত্রে যে দেনমোহরের ব্যাবস্থা করা আছে, যা নগদ পরিশোধযোগ্য অথচ নারীদের এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য জানা নেই। ফলে তারা এটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বা বঞ্চিত করা হচ্ছে।

আমাদের দেশে দেনমোহর সংক্রান্ত সুবিধা শতকরা ৯৮ জন নারীরাই পান না। যার মূল কারণ শিক্ষার অভাব বা এই বিষয়ের অজ্ঞতা! এছাড়া সম্পত্তির অংশীদারীত্বের ক্ষেত্রে নারীর পিতা, মাতা, স্বামী, ভাই ও সন্তানের সম্পত্তিতে অধিকার রয়েছে। অথচ অজ্ঞতার কারণে তারা এই সম্পত্তি অধিকার থেকেও অনেক সময় বঞ্চিত হন। আবার শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা, চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন কোঠা পদ্ধতি ইত্যাদি থাকার পরেও শতকরা ১০০ জন কন্যা শিশু স্কুলে যাচ্ছে না।

স্কুল-কলেজে ৪০ শতাংশ নারী শিক্ষকও পাওয়া যাচ্ছে না। যা নারী অনগ্রসরতা, নিরক্ষতার একটি জলন্ত উদাহরণ। সুতরাং সব ধরনের সুবিধা থাকার পরেও আমাদের নারী সমাজ তাদের অবস্থান সূচক জায়গায় পৌঁছাতে পারছে না। তাই নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে। হতে হবে সচেতন। একজন নারীর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে সমাজের সব ক্ষেত্রে। দেশে প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতা, বিরোধীদলের নেতা, স্পিকারসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন নারী। তাই তো অন্য নারীদেরও সব দুর্বতা-ভয় দূরে রেখে এগিয়ে আসতে হবে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার দিকে। তবে শক্তিশালী হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৬
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।