দিন-রাত খেলার নিউজ লিখি, তাই প্রিয় খেলোয়াড়ের একটি কথা দিয়েই এ লেখা শুরু করছি। টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা বরাবরই বলে থাকেন, ‘আমার দলটা যেন একটা পরিবারের মতো হয়।
বাংলানিউজের ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কিছু লিখতে চাইছিলাম বাংলানিউজ পরিবার নিয়ে। বাংলানিউজে প্রায় আড়াই বছর ধরে কাজ করছি। এই অল্প সময়েই প্রতিষ্ঠানটি আপন হয়ে গেছে। সহকর্মীরা হয়ে গেছেন জীবনেরই অংশ।
অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে প্রায়ই ভাবি কীভাবে এমন হলো? বাংলানিউজ একটি সুখী পরিবার। আর দশটা পরিবারের মতোই একটা পরিবার। আর সব সহকর্মীরা হলেন এই পরিবারের এক একটা অঙ্গ, এক একজন সদস্য। যাদের অভিভাবক এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন স্বয়ং।
ধরা যাক, কিছু একটা বুঝতে পারছি না, মুখ ফুটে জানালাম। সঙ্গে সঙ্গে সিনিয়র-জুনিয়র সবাই ঝাঁপিয়ে পড়বে কীভাবে সাহায্য করা যায়। হয়তো সিনিয়র ভাইয়াদের জানালাম, এই লেখাটা বড় হয়ে গেছে, কী করব? সুন্দর করে আমাকে বুঝিয়ে দেবেন কি করে লেখাটা ছোটো করেও সব কিছু তুলে ধরা যায়। আমাদের স্পোর্টসের যেকোনো বড় ইভেন্টে নিউজরুমের ভাইয়ারা নিজেদের কাজের পাশাপাশি আমাদের যেভাবে সহায়তা করেন, যেভাবে সমর্থন দেন, কোনো ঘটনা ঘটলেই আমাকে দ্রুত অবহিত করেন কিংবা নিজেরাই নিউজ প্রস্তুত করে সবার আগে প্রকাশ করেন- তা সত্যিই আমাকে কৃতজ্ঞ করে।
গুরুত্বপূর্ণ কোনো ম্যাচ নিয়ে স্বয়ং এডিটর ইন চিফ খোঁজ-খবর নেন, নিজে দাঁড়িয়ে থেকে নির্দেশনা দেন। গভীর রাতে কিংবা খুব ভোরের ফুটবল ম্যাচ নিয়েও তিনি সর্বদা অভিভাবকের মতো নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
ক্রিকেটের হাইভোল্টেজ ম্যাচে হেড অব নিউজ মেনন মাহমুদ নিজেই বসে যান বল-টু-বল আপডেট দিতে। আমাদের কাজটা সহজ করে দেন তিনি। প্রায়ই তাকে বলি, ‘ভাইয়া স্পোর্টসে জয়েন করেন’। কিভাবে আমরা দ্রুত সময়ে সঠিকভাবে কোন অ্যাঙ্গেলে থেকে পাঠককে পূর্ণ ম্যাচের ঘটনা জানাতে পারবো আউটপুট এডিটর জাকারিয়া মন্ডল নিজের কাজের ফাঁকে তা দেখভাল করেন। খুব আন্তরিকভাবেই তিনি আমাদের সহায়তা করেন। চিফ অব করেসপন্ডেন্ট সেরাজুল ইসলাম সিরাজ বরাবরই বলেন, ‘আমি খেলা খুব একটা বুঝি না’। কিন্তু, আমাদের কাজে তিনি যেভাবে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন আর সবসময় আমাদের সমর্থন দেন তাতে বলতে ইচ্ছে হয়, ‘ভাইয়া, খেলা বুঝতে হবে না, আমাদের সঙ্গে থাকুন সারাক্ষণ, যেভাবে একটা পরিবারের সদস্যরা একে অন্যের সঙ্গে থাকে’।
বাংলানিউজ পরিবারের বন্ধনের কথায় আসি। হাউজে কারো জন্মদিন! সবাই মিলে তাকে শুভেচ্ছা জানানোর প্রথা পরিবারের মতোই। ঘটা করে না হোক, কেক কেটে অনাড়ম্বর আয়োজনে আনন্দ উদযাপন করি। রোজার মাসে একসঙ্গে ইফতার করি। এডিটর স্যার প্রতিনিয়ত ইফতারের আগে-পরে একবার এসে খোঁজ নিচ্ছেন। কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না জিজ্ঞেস করছেন। প্রতিটি ঈদে অফিস ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় স্যার নিজ উদ্যোগে খাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
ওয়েব সেকশনের ইনচার্জ অমিয় দত্ত সেদিন বলছিলেন, ‘বাংলানিউজের কাঁচঘেরা এই হাউজ যেদিন শুরু হয়েছে, সেদিন থেকে এর মূল দরজা খোলা। কখনো এডিটর স্যার তা বন্ধ করতে বলেননি। ’ ভেবে দেখেছি দাদার কথা আসলেই সত্যি। কাজের ক্ষেত্রে ডিউটি শেষে রাত দুইটায় এই দরজা দিয়েই আমি যেমন বের হয়েছি, ঠিক তেমনি ভোর পাঁচটার সময়ও আমি হাউজে ঢুকেছি। ঠিক যেন নিজের বাসায় আসছি-যাচ্ছি। মনে হয় এটাই যেন আমার বাসস্থান।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৬
এমজেএফ/