একজন রাষ্ট্রনায়ক যখন তার সরকারের কার্যক্রমের ওপর শতভাগ কমান্ড রাখেন, প্রতিটি সাফল্যের পরিসংখ্যান চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারেন আর প্রতিপক্ষের অকার্যকারিতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারেন তখন তিনি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ধ্রুপদী ক্ষমতার অধিকারী বিশ্বনেতাদের কাতারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে যান।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে রামপাল ইস্যুতে সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোরকে যেদিন তিনি ভয়ডরহীন স্মার্টনেসে সামলেছেন, সেদিন থেকেই আমি তার ভক্তে পরিণত হই।
তিনি তার লক্ষ্য জানেন। তিনি তার এসটিপি, এলটিপি চোখ বন্ধ করে দেখতে পান এবং তিনি শ্রমনির্ভর ইকোনমির জায়গায় জ্ঞাননির্ভর ইকোনমি তৈরির স্বপ্ন দেখেন। প্রতিটি বিষয়ে যে জ্ঞান তিনি রাখেন, যতটা ডিটেলে তিনি যেতে পারেন আমার ধারণা খুব কম রাষ্ট্রনায়কদের পক্ষে তা সম্ভব।
তিনি দারুণ কনফিডেন্টের সঙ্গে তার সাফল্যের পরিসংখ্যন তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের জিডিপি এখন ৬ দশমিক ১ ভাগ। বৈদশিক রিজার্ভের পরিমাণ ৩২ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি আয় ৩৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬৬ ডলার। দরিদ্র্যতা অর্ধেকের বেশি কমিয়ে ২২ দশমিক ৪ ভাগে নামিয়ে এনেছি। শিক্ষার হার এখন ৭১ শতাংশ। গড় আয়ু ৬১ বছর। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখন ১৫ হাজার মেগাওয়াট। আর বর্তমানে দেশের ৭৮ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। ’
এ যেন এক অন্য শেখ হাসিনা। প্রতিপক্ষের প্রতি কোনো বিষোদগার নেই, নেই কোনো আক্রমণাত্মক বাগাড়ম্বর। মুগ্ধ হয়ে শুধু দেখছিলাম জাতির সত্যিকারের অভিভাবক হয়ে ওঠা এক নেতার ব্যক্তিত্বের আমূল পরিবর্তন। তিনি যখন বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর এখন জাপানের সহায়তার ২ বছর খাদ্য মজুদের বিশেষায়িত ব্যবস্থা তৈরির কাজ করছেন, তখন সাহসী হই রূপকল্প-২০৪১ নিয়ে। যখন বলেন কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রথম টানেল নির্মাণ এবং ডিসেম্বরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিক্ষেপণের কাজ শুরু হবে তখন তা অবধারিত বাস্তবতা হিসেবে মেনে নিতে মন সায় দেয়।
আমরা তরুণরা তো এমন এক নেতার ছবিই মনে এঁকেছি সবসময়। যিনি স্বপ্ন দেখবেন, দেখাবেনও, তার বাস্তবায়নও করবেন। আমাদের আইইবি চট্টগ্রাম সেন্টারের জন্য স্থায়ী একটি জমি সহ ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করার অঙ্গীকার যখন তিনি করেন, তখন আর তা খুব একটা আশ্বাস মনে হয় না। মনে হয় এ তার কোনো প্রতিজ্ঞা, যার বাস্তবায়ন সন্নিকটে।
লেখক পরিচিতি: সদস্য আইইবি, রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞ