ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

বাংলানিউজের একজন মুগ্ধ পাঠক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৮
বাংলানিউজের একজন মুগ্ধ পাঠক ...

বাংলানিউজের সাথে আমার সম্পর্ক এর প্রথম প্রকাশকাল থেকে। আমি যখন উচ্চশিক্ষার্থে হংকংয়ে ছিলাম তখন থেকে বাংলানিউজের একজন নিয়মিত পাঠক হয়ে উঠি। প্রবাসে থেকে দেশের সব খবর এমনকি প্রবাসীদের খবরও পেতাম বাংলানিউজে। খুব কাছ থেকে আমি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জীবনযাপন দেখেছি, দেখেছি তাদের জীবনযুদ্ধ। বাংলানিউজের সুবাদে দেশের খবরের পাশাপাশি প্রবাসীদের জীবনযাত্রা, চাওয়া-পাওয়া, আনন্দ-বেদনা সম্পর্কেও জানতে পারতাম।

ছোটবেলা থেকেই আমার পত্রিকা পড়ার প্রতি আলাদা একটা দুর্বলতা ছিল। আমাদের বাসায় তখন ‘ইত্তেফাক’ পত্রিকা রাখা হত।

খবরের কাগজ দেওয়ার সাথে সাথে আমরা ভাইবোনেরা কাড়াকাড়ি শুরু করে দিতাম, কে আগে পড়বে এটা নিয়ে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়ে যেত, শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হত, কাঁচি দিয়ে মাঝখান থেকে কেটে প্রত্যেককে এক পাতা দিতে হবে, ঐ পাতা পড়া হয়ে গেলে অন্যকে দিতে হবে। অর্থাৎ, কেউ খালি হাতে বসে থাকবে না। তখন থেকে এখন পর্যন্ত আজও খবরের কাগজ পড়ার প্রতি আগ্রহ একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে। এখন প্রতিদিন কমপক্ষে ৫/৬টি পত্রিকা পড়ি। এটা সম্ভব হয়েছে অনলাইন ভার্সন থাকার জন্য। বিভিন্ন কারণে অনলাইন পত্রিকা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে; যেমন, খুবই দ্রুত নিউজ পাওয়া যায়, সম্পূর্ণ বিনা খরচে, পরিবেশ বান্ধব, পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে নিউজ পড়া যায় (ইন্টারনেট সংযোগ থাকা সাপেক্ষে), নিউজের সাথে ভিডিও অনেক সময় থাকে, কোন নিউজের আগে ও পরের আপডেট থাকে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ( আমদের কাছে বাংলানিউজ নামেই পরিচিত) অন্য পত্রিকা থেকে বিভিন্নভাবে আলাদা। এইটিই বাংলাদেশের একটি সফল, সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল খবরের কাগজ। আমি মনে করি, এটি আন্তর্জাতিক মানের, এমনকি আমাদের আশেপাশের অনেক দেশেই এত সুন্দর, গোছানো, ডিজিটাল পত্রিকা নেই। বাংলানিউজের সাংবাদিকরা অনেকবেশি অঙ্গীকারাবদ্ধ, শিক্ষিত, তরুণ ও দেশপ্রেমিক। দেশকে ভালবাসেন অনেক দরদ নিয়ে।

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, একবার নিউজ করলেন—খোকনের স্বপ্নপূরণ হচ্ছে না কিছু টাকার অভাবে। ভীষণভাবে নাড়া দিল, প্রবাসী আমাদের। সাড়া পড়ে গেল। খোকনের স্বপ্নপূরণ হল। আবার নিউজ হল, ঝিনাইদহে ২০ হাজার টাকায় নিজের সন্তানকে বিক্রি, নাড়া দিল আমাদের। কথা বলেছিলাম আলমগীর হোসেন, সেই সময়ের এডিটর ইন চিফের সাথে। চেষ্টা করেছিলাম, মায়ের কোলে বাচ্চাকে ফিরিয়ে দিতে, কিন্তু মা রাজি হয়নি। এরকম হাজার হাজার নজির আছে তাদের। এখানকার সাংবাদিকদের কাজ শুধু নিউজ করা না, এর পরের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে এরা অনেক সচেতন। পাঠক কিভাবে নিচ্ছে, সেটা এখানে লক্ষ্য করা হয়। পাঠকের মতমত কে দারুণ গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাংলানিউজের সাংবাদিকরা শিক্ষিত, তরুণ, মার্জিত, সর্বোপরি দেশের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলানিউজে বোদ্ধা পাঠকদের জন্য চিন্তার খোরাক থাকে, আবার যারা বোদ্ধা পাঠক নন, কেবল নানা ধরনের খবর পাঠ করে খুশি থাকতে চান, তাদেরও খুশি করার উপকরণ থাকে।

খুলনা বিভাগীয় প্রধান মাহবুবুর রাহমান মুন্নার সাথে মাঝে মাঝে আমার কথা হয়। দারুণ আগ্রহ সাহিত্যের প্রতি, দারুণ গুছিয়ে কথা বলেন, খুব সল্পসময়ের মধ্যে সাবার কাছে খুবই জনপ্রিয়। তাকে আমরা বলি খুলনার ভবিষ্যৎ কিংবদন্তি সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ লিয়াকত আলী।

বাংলানিউজের বিভিন্ন বিভাগের ভিন্নধর্মী উপস্থাপনা এটিকে অনেক পাঠকপ্রিয় করেছে। এর ‘ফিচার’ বিভাগটি খুবই জনপ্রিয়, ‘খেলাধুলা’ বিভাগ ক্রীড়ামোদীদের সবসময় চাঙ্গা রাখে। বাংলানিউজের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বাংলার আনাচে-কানাচের সব খবর পাওয়া যায়। জেলার খবরে গেলে আপনি বাংলাদেশের সব জেলার খবর পেয়ে যাবেন। কী নেই এই প্রত্রিকায়, রান্নাবান্না, বিনোদন, ভ্রমণ, ধর্মীয় বিষয় এবং অরও অনেক কিছু। কোনকিছুই যেন বাদ না পড়ে, সেজন্য এরা খবুই সর্তক।

দেখতে দেখতে প্রিয় বাংলানিউজ ৮ বছর পার করছে। ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাংলানিউজের পরিবারের সকল সদস্যকে জানাচ্ছি লাল গোলাপের শুভেচ্ছা, সেই সাথে তাদের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

পরিশেষে, বাংলানিউজের একজন পাঠক হিসেবে এর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। দীর্ঘজীবী হোক বাংলানিউজ, দীর্ঘজীবী হোক বাংলাদেশ।

মো. সামিউল হক, সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৮
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।