ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

হোয়াইট ক্রিসমাস, গ্রিন ক্রিসমাস!

মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১১
হোয়াইট ক্রিসমাস, গ্রিন ক্রিসমাস!

পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে ‘সান্তা ক্লস’ হচ্ছেন সেন্ট নিকোলাস ফাদার ক্রিসমাস। সংক্ষেপে ‘সান্তা’ হিসেবে পরিচিত।

যার রয়েছে ধর্মীয়, লৌকিক, পৌরাণিক, ঐতিহাসিক এবং লোকাচারগত উপজীব্যতা। তাই ক্রিসমাস এলে সান্তার উপস্থিতি ঘটে। শুভ্র-শ্মশ্রুমণ্ডিত বিশালদেহী সান্তা লাল-সাদা পোশাকে আবির্ভূত হন। শিশু-কিশোররা এক অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠে তাকে নিয়ে। প্রচলিত আছে ‘সান্তা’ ক্রিসমাসের আগের রাতে তাদের জন্য উপহার নিয়ে হাজির হন দরজায় কিংবা বিছানার ধারে। আধুনিক যুগে ডাচ সংস্কৃতির ‘সিন্টারক্লাস’কে উপহার দেওয়ার কিংবদন্তী সেন্ট নিকোলাস ধরা হয়। এ নিয়ে গ্রিক ও বাইজানজান্টাইন থেকে ‘বাসিল অব কেসারিয়া’য় সদৃশ্য লোকাচার আছে। ঠিক যেমনটা সদ্য ভূমিষ্ট যিশু খ্রিস্টকে দেখতে এসেছিলেন বেথলেহেমে ‘মেজাই’ হিসেবে ‘থ্রি কিংস’ বা ‘থ্রি ওয়াইজ মেন’ বা ‘কিংস অব দ্য ইস্ট’ স্বর্ণ, সুগন্ধ কিসমিস এবং ওলেকিসমিস জাতীয় গাম, ‘মির’ নিয়ে।

১৮২০ সালের ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই সান্তা বাস করেন ‘নর্থ পোল’ বা উত্তর গোলার্ধে। শীত, তুষার আর বরফের রাজ্যে। তিনি চলাচল করেন নয়টি (প্রকৃত অর্থে আটটি) `উড়ন্ত বল্গাহরিণ` (‘রেইন ডিয়ার’ ) চালিত সেডেল ও স্লে-তে চড়ে। নবম যে হরিণটিকে সচরাচর ধরা হয় না, সেটি হচ্ছে ‘রুডলফ দ্য রেড-নোজড রেইনডিয়ার’। নাকে তার রক্তিম আভার ঔজ্জ্বল্য শোভা পায়। ১৯৩৪ সালের প্রখ্যাত গান ‘সান্তা ক্লস ইজ কামিং টু টাউন’ গানটি থেকে এটা ধারণা করা হয় যে, তিনি বিশ্বের শিশুদের একটি তালিকা করে চলেছেন, কে ‘ভালো’ আর কে ‘দুষ্ট’ এবং সেভাবেই তাদের তিনি ঘরে ঘরে উপহার পৌঁছে দেন। শিশুদের কোমলমতি মননে ভালো হবার কৌশল বৈ কি!

তাই পাশ্চাত্যের শীত প্রধান দেশে ক্রিসমাসের আগে-পরে তুষার না পড়লে শিশু-কিশোরদের মন বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। তারা ভাবে, তুষার ও বরফ রাজ্যের সান্তা আসবেন কি করে? তুষার যে পড়েনি! হোয়াইট ক্রিসমাসের পরিবর্তে গ্রিন ক্রিসমাস হবে। সান্তার রেইন ডিয়ার স্লে-টি চলবে কি করে? এবার কানাডার টরন্টোয় মেঘাচ্ছন্ন আকাশ থেকে বরফ পড়ার সম্ভাবনা নেই। বিশ্বময় জলবায়ুগত পরিবর্তনে শীতপ্রধান দেশেরও আবহাওয়া পাল্টে গেছে। অথচ তুষারের পরিবর্তে কুয়াশাচ্ছন্ন বাংলাদেশে এখন প্রচন্ড শীত। পুরো দেশটা শীতে কাঁপছে। ষাটজনের বেশী দরিদ্র মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে মারা গেছে। হায়রে দুর্ভাগা দেশ আমাদের সান্তা কে হবে?

ই-মেইল: bukhari.toronto@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।