ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

করোনাকালে ফিরে এসেছে হারানো সংস্কার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২০
করোনাকালে ফিরে এসেছে হারানো সংস্কার ফিরে এসেছে হারানো সংস্কার।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূর্বপুরুষদের যেসব রীতিনীতি পালন করতেন, তাকে কুসংস্কার অপবাদ দিয়ে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের মহামারীর এই সময়ে কথিত সেসব কুসংস্কারই পরিণত হয়েছে সংস্কারে। এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, আমাদের পূর্বপুরুষরা এসব কাজ করে গেছেন মানুষেরই কল্যাণে।

প্রাচীনকালে শৌচালয় ও স্নানঘর বাড়ির বাইরে উঠোনে বানানো হতো। চুল কাটার পর বা মৃতদেহ সৎকার করে ঘরে ফেরার পর বাইরেই স্নান করে ঘরে ঢুকতে হতো।

দাহ সৎকারকারী ব্যক্তির বস্ত্র শ্মশানেই ত্যাগ করার নিয়ম ছিলো। স্নানের পর আগুন স্পর্শ করার নিয়ম ছিলো। কারো জন্ম বা মৃত্যুর পর পরিবার দশ বা তের দিন যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতো না। কোনো বাড়িতে মৃত্যু হলে খাবার প্রস্তুত করা নিষেধ ছিলো। এছাড়া জুতো বাইরে রাখা হতো, বাইরে পরিধান করা জুতো নিয়ে ঘরে প্রবেশ নিষেধ ছিলো। বাইরে থেকে এসে ঘরে প্রবেশের সময় বালতিতে রাখা জল দিয়ে হাত-পা ধুয়ে ঘরে প্রবেশ করার নিয়ম ছিলো।

জীবাণুরোধে প্রতিদিন ভোরে গোবরের সঙ্গে পানি মিশিয়ে উঠোনো ছিটানো হতো। ঘর লেপা হতো গোবর মিশ্রিত জল দিয়ে। স্নান করে ঘরে ধূপ দেওয়া (সকাল ও সন্ধ্যা), কর্পূর ছিটানো, ঘন্টা ও শঙ্খ বাজানোর নিয়ম ছিলো। প্রত্যেক বাড়িতে লাগানো হতো তুলসী গাছ, নিম গাছ, বেল, জাম্বুরা, লেবু, মরিচ ও বাসক গাছ। রান্না করার পূর্বে স্নান করা জরুরী ছিলো। স্নান করার পর কোনো অশুদ্ধ ব্যক্তি বা বস্তুর সংস্পর্শে আসা নিষেধ ছিলো। মাথা ও মুখ ঢেকে রাখা হতো কাপড়ে। বছরের বিশেষ দিনে পাহাড়ী লতা-গুল্ম পুড়িয়ে তার ধোঁয়া লাগানো হতো শরীরে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুই হাত জোড় করে ‘নমস্কার’ জানানোর রীতি সনাতন ধর্ম থেকেই সৃষ্ট। নিকটাত্মীয়দের মধ্যে বিবাহ যে বিজ্ঞানসম্মত নয়, সে কথাও সনাতন ধর্ম অনেক আগেই জানিয়ে দিয়ে গেছে।  

আমরা পূর্বপুরুষদের সৃষ্ট এসব নিয়মের অমর্যাদা করেছি দীর্ঘকাল, আর অনুসরণ করছি পশ্চিমা প্রথার। ফলে দুর্যোগ আর বিপদ সবার পিছু লেগেই আছে। প্রাচীন মুনি-ঋষি এবং তাঁদের উত্তরসূরি সাধকরা সাধনার মধ্য দিয়ে বহুত্বময় এই জগতের কারণস্বরূপ এক, অখণ্ড, অনন্ত চৈতন্যকে উপলব্ধি করেছেন। এই চিৎ সত্তা বা চৈতন্যকেই তাঁরা জগতের নিমিত্ত ও উপাদান কারণরূপে চিহ্নিত করেছেন। জগতের ভিত্তিস্বরূপ এই অখণ্ড অনন্ত চৈতন্যই ঈশ্বর। ঈশ্বরের স্বরূপ উপলব্ধি করে তাঁরা জড়জাগতিক সবকিছু থেকে নিজেদের আলাদা রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।

আমাদের পূর্বপুরুষদের বৈদিক সমাজ ছিল যজ্ঞপ্রধান। জীবনের শুরু ‘গর্ভাধান’ থেকে জীবনের শেষ ‘দেহত্যাগ’ সবই হতো ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে। জীবৎকালে প্রতিদিনই পঞ্চমহাযজ্ঞ করতে হতো। এছাড়া অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মতো বিবিধ যজ্ঞে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ‘হবি’ (বর্তমানে পূজায় অর্ঘ্য নিবেদন) উৎসর্গ করা হতো। এ হলো ঈশ্বরের দেওয়া জীবন ও দেহ দ্বারা ঈশ্বরের সৃষ্ট প্রকৃতির উপাদানসমূহ ভোগ করার প্রেক্ষিতে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতাপূর্বক তাঁর উপাসনা করা। তাই অন্ত্যেষ্টি তথা জীবনের শেষ যজ্ঞে ঈশ্বরপ্রদত্ত এই দেহখানি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই অর্ঘ্যরূপে উৎসর্গ করা হয়।

বাস্তবে দেহ পাঁচটি উপাদানের সমষ্টি। এগুলো হলো- ক্ষিতি (মাটি), অপ (জল), তেজ (আগুন), মরুৎ (বাতাস), ব্যোম (আকাশ বা শূন্যস্থান)। শবদাহ করার মাধ্যমে দেহকে এই ৫টি উপাদানেই মিশিয়ে দেওয়া হয় প্রত্যক্ষভাবে। অপরদিকে সমাধি দিলে দেহ পঞ্চভূতে লীন হয় বটে, তবে পরোক্ষ ও ধাপে ধাপে। কারণ দেহ মাটির সঙ্গে মিশে পচন প্রক্রিয়ায়। কোটি কোটি অণুজীব, পোকা-মাকড়ের খাবারে পরিণত হয় দেহ। এতে রোগ-ব্যাধি ছড়ানোর আশংকা থাকে। প্রকৃতপক্ষে মৃত্যু হয় দেহের, আত্মার নয়। অবিনাশী আত্মা অজর, অমর, অক্ষয়, অব্যয়।

বর্তমান সময়ে নির্বিচারে প্রাণি হত্যাকে নানান রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণ হিসেবে ভাবা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সনাতন ধর্মে সচেতন করা হয়েছে। শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় সপ্তদশ অধ্যায়ের ৮-১০ নম্বর শ্লোকে বলা হয়েছে: ‘সাত্ত্বিক আহার সরস, স্নিগ্ধ ও প্রীতিকর। এতে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। রাজসিক আহার অতি তিতা, অতি টক, অতি নোন্তা ইত্যাদি। এতে দুঃখ, রোগ ও শোক জন্মে। দুর্গন্ধযুক্ত, বাসি, এঁটো ও অপবিত্র- এসব তামসিক আহার’। আহার যত সাত্ত্বিক হয়, মানুষের বৃত্তিও ততই সাত্ত্বিক হয়। গীতায় যেখানে খাদ্যের কথা এসেছে, সেখানে ভগবান আহারী অর্থাৎ ব্যক্তিটির কথা বর্ণনা করেছেন। যেমন: নিয়তহারাঃ (৪/৩০) পদ দ্বারা নিয়মিত আহারকারী, নাত্যশ্নতন্তু যোগোহন্তি ন চৈকান্তমনশ্নতঃ (৬/১৩) পদ দ্বারা নিয়মিত ভোজনকারী, যুক্তাহারবিহারস্য (৬/১৭) পদ দ্বারা অধিক ভোজনকারী, যুক্তাহারবিহারস্য (৬/১৭) পদ দ্বারা নিয়মিত ভোজনকারী, যদশ্নাসি (৯/২৭) পদে ভোজ্য পদার্থ ভগবানে অর্পণকারী এবং লঘ্বাশী (১৮/৫২) পদ দ্বারা অল্প ভোজনকারীর বর্ণনা করা হয়েছে।

নমস্কার। যা ছিল একান্তভাবেই ভারতীয় উপমহাদেশের সৌজন্য ও শুভেচ্ছা জানানোর পদ্ধতি, করোনা আতঙ্কে তাকেই গ্রহণ করে নিলেন বিশ্ব নেতারা। একে অপরের সঙ্গে দেখা হলে তারা আর হাত মেলাচ্ছেন না। বরং হাত জোড় করে নমস্কার করছেন। নমস্কারের মধ্যে হাত মেলানোর ঝক্কি নেই। করোনার সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ন্যূনতম কিছু স্বাস্থ্যবিধি পালন করার কথা বলছেন চিকিৎসকরা। নিষেধ করছেন হাত মেলাতে। এই অবস্থায় হাত না মেলানোর বিকল্প হলো নমস্কার। শুভেচ্ছাও জানানো হল, আবার হাতও মেলাতে হলো না। ফলে নিরাপদ সেই রাস্তাই বেছে নিয়েছেন তারা।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুতার তলায় করোনা ভাইরাস পাঁচদিনের বেশি বেঁচে থাকতে সক্ষম। বাড়ির বাইরে, বিশেষ করে সুপার মার্কেট, বিমানবন্দর ও গণপরিবহনে যাতায়াত করার পর জুতা বাড়ির ভেতরে নিলেই ঝুঁকি বাড়ে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির ড্রপলেট কিংবা হাঁচি-কাশির মাধ্যমে রাস্তায় করোনা ভাইরাস পড়ে থাকলে জুতার মাধ্যমে ঘরে হাজির হতে পারে। সে কারণে বাসার ভেতরে আলাদা স্যান্ডেল ব্যবহার এবং বাইরে ব্যবহৃত জুতা বাসার ভেতরে না নিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন তারা। এ কথা আমাদের পূর্বপুরুষরা বলে গেছেন অনেক আগেই।

আবার পরিবেশ সুরক্ষায় গোবর বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। গ্রামাঞ্চলে গোবর মাটির ঘর লেপার জন্য ব্যবহার করা হয়। গোবর সার মাটির জৈব উপাদান বৃদ্ধি করে এবং মাটির স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখে। সব ধরনের জীবাণু নাশ করতে এখন ব্লিচিং পাউডার, স্যাভলন, ডেটল কিংবা হ্যান্ড সেনিটাইজার যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার চেয়ে বহুগুণ উপকারী গোবর মিশ্রিত জল ছিটানো।

একটা সময় ছিল যখন প্রায় বাড়িতে তুলসী গাছ লাগানো হতো। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ তুলসী গাছকে পবিত্র ঔষধি হিসেবে সম্মান প্রদান করেন। শাস্ত্রেও বলা আছে, বাড়িতে তুলসীগাছ থাকলে মৃত্যুর দেবতা যমরাজও ঘরে ঢুকতে পারেন না। বাস্তুর দিক থেকেও তুলসীর গুরুত্ব কম নয়। শাস্ত্রে যাদের অবিশ্বাস, তারা শুধু ভেষজ গুণের জন্য হলেও বাড়িতে একটি তুলসীগাছ রাখতে পারেন। জ্বর-ঠাণ্ডা থেকে শুরু করে বিভিন্ন রোগ সারাতে তুলসী পাতা খুবই উপকারি।

পাশাপাশি বাসক পাতাও উপকার দেয় কাশি সারাতে। বেলের গুণও অনেক। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম। গরমের সময় পরিশ্রমের পর বেলের শরবত খেলে ক্লান্তি ভাব দূর হয়। বেলের ভিটামিন ‘এ’ চোখের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর পুষ্টি জোগায়। বেল পেটের নানা অসুখ সারাতে অত্যন্ত কার্যকর। বেলের ভিটামিন ‘সি’ গ্রীষ্মকালীন বহু রোগবালাই দূরে রাখে। এছাড়া একটি জাম্বুরায় দৈনিক চাহিদার ৬০০ শতাংশ ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়। এটি এসকরবিক অ্যাসিডের ভালো উৎস যা দ্রুত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। ভিটামিন ‘সি’ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে যা শ্বেত রক্তকণিকার কার্যক্রম বাড়ায় এবং ফ্রি রেডিক্যালের বিরুদ্ধে কাজ করে।

বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে ঔষধি গাছ হিসেবে নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে গত ৫ হাজার বছর ধরে। নিমের আছে ১৩০টি ঔষধি গুণ। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ানাশক হিসেবে নিম খুবই কার্যকর। আর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও এর জুড়ি মেলা ভার। করোনাকালে বেল, তুলসী পাতা, কমলালেবু ও নিম পাতার বেড়েছে।

মানুষের জীবনধারণের নানা উপকরণ সরবরাহের পাশাপাশি গাছ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের যোগান দেয়। নানাভাবে মানবসভ্যতাকে উপকৃত করে আসা গাছের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আদিকাল থেকেই। তাই পরিবেশ রক্ষার তাগিদে গাছের প্রতি প্রেম বা বৃক্ষপূজা করার রীতি রয়েছে সনাতন ধর্মেই।

উপনয়ন একটি হিন্দু শাস্ত্রানুষ্ঠান। এ আয়োজনে শরীরে যজ্ঞোপবীত বা উপবীত (পৈতে) ধারণ করা হয়। এরপর নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট কয়েকদিন গৃহবন্দি থাকতে হয়। সনাতনীদের আশ্রমের থাকার বিষয়টি একসময় বেশ প্রচলিত ছিল। ব্রহ্মচারীর আশ্রয় গুরুগৃহ, গৃহীর আশ্রয় গৃহ, বানপ্রস্থীর আশ্রয় বন এবং সন্ন্যাসীর আশ্রয় বন, মঠ, মন্দির। নির্জন বাস বা একাকী থেকে সাধনা করা এই ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এছাড়া শরীর গঠনের জন্য শাস্ত্র নির্দেশ করেছে বিভিন্ন যোগাসনের।

সনাতন শাস্ত্রবিশারদরাও বলে গেছেন, জনকোলাহল থেকে দূরে থাকা, গোলযোগপূর্ণ স্থান এড়িয়ে চলা কিংবা দ্রুত ত্যাগ করা, অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানে না যাওয়া, কাজ ছাড়া জনসমাগমে অতিরিক্ত সময় ব্যয় না করা, নিজেকে সবসময় সুরক্ষিত ও পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। বলা হয়েছে, পূজা হয় হৃদমন্দিরে। নিরালায় বিগ্রহের সম্মুখে নিজের ভক্তি অর্পণই পূজা। আর এসব কিছুই করোনাকালের কোয়ারেন্টিন।

সনাতন ধর্মমতে, ব্রহ্মাণ্ড পাঁচটি তত্ত্ব দিয়ে তৈরি, আর পাঁচটি তত্ত্বের সমন্বয়ে সবকিছু সুচারুরূপে চলে। তাই নিত্য পদ্ধতিতে কিছু উপাদান ব্যবহার হয় যা দিয়ে এই তত্ত্বগুলোকে সঞ্চারিত করা হয়। ধূপ দিয়ে বায়ু তত্ত্বকে সঞ্চারিত করা হয়। প্রদীপ দিয়ে অগ্নি তত্ত্ব, জল দিয়ে জলতত্ত্ব, ফল ও ফুল দিয়ে পৃথিবী তত্ত্বকে সঞ্চারিত করা হয়। একাগ্রচিত্তে মন্ত্র উচ্চারণে বা জপ করে আকাশ তত্ত্ব সঞ্চারিত হয়। শঙ্খ ও কাঁসর বাজানোর শব্দে পরিবেশে, বাতাসে বিদ্যমান অনেক রকম জীবাণুর অবসান হয়। এই সবকিছুর সমন্বয়ে আরাধনা করতে হয় সেই নিরাকার পরম ব্রহ্মের।

আয়ুর্বেদ গ্রন্থ ‘অষ্টাঙ্গহৃদয়’-এ বলা হয়েছে, ‘একবিংশোতিরাত্রেন বিষং শ্যাম্যতি সর্বথা’। অর্থাৎ একুশতম রাতে বিষের উপশম হয়। আড়াই হাজার বছর আগে রোগ-জীবাণু থেকে রক্ষা পাওয়ার পথ দেখিয়ে গেছেন সুশ্রুত মুনি। তিনি জানিয়েছেন, জীবাণুর সংক্রমণে যখন সভ্যতা বিপন্ন হয়, তখন প্রত্যেক রোগী ও তার সংস্পর্শে আসা মানুষকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।

সুশ্রুত সংহিতায় রোগ-জীবাণু প্রতিরোধে আক্রান্তের বাড়ি, শয্যা, আসন, অলংকার ও ব্যবহার্য জিনিস ত্যাগ করতে বলা হয়েছে। জনপদ ধ্বংসের উপসর্গ হিসাবে শ্বাস, কাশদূষণ, মাথা যন্ত্রণা, বমি, নাক দিয়ে জল পড়ার মতো উপসর্গের উল্লেখ রয়েছে। গ্রন্থের ছয় নম্বর অধ্যায়ের ৩২ ও ৩৩ নম্বর শ্লোকে বলা হয়েছে, স্পর্শের মাধ্যমে, কাশির মাধ্যমে, একই থালায় ভোজন, একই বিছানায় শয়ন করলে, একই কাপড়ে অঙ্গ মার্জনা করলে, এক অলংকার পরিধান করলে কিংবা একই পাত্রে রক্ষিত মলম মাখলে রোগ ছড়ায়। এই উপসর্গিক রোগগুলো একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়ে। আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের সঙ্গে সবকিছুরই যেন অদ্ভুত মিল।

লেখক: সাংবাদিক

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘন্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২০
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।