করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদ বাজার তেমন জমেনি। মহামারি করোনার কারণে করোনার প্রথম বছর মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি বললেই চলে।
তবে এ বছর করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে ঈদ বাজার স্বাভাবিক হতে চলেছে। যার ফলে এবারের ঈদ বাজার স্বাভাবিকভাবেই আগের বছরগুলির তুলনায় বেশ জমজমাট হয়ে উঠবে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রোজার শুরুর আগে থেকেই অনেকেই ঈদ কেনাকাটা শুরু করেন। বিশেষত যারা সেলাই করা কাপড়ে ঈদ করেন তারা রোজা শুরুর আগেই থান কাপড় কেনে সেলাই করতে দিয়ে দেন।
কিন্তু মূলত ঈদ বাজার জমে ওঠে ১৫ রমজানের পর থেকে। চাকরিজীবীদের অনেকের বেতন হয়ে থাকে ১৫-২০ রমজানের ভেতর। মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীও মধ্য রোজা থেকে পরিবার পরিজনের জন্য ঈদ বাজার করতে বের হন। যার ফলে ১৫ রমজানের পর সর্ব শ্রেণী পেশার মানুষের আনাগোনায় ঈদ বাজার বেশ জমজমাট হয়ে ওঠে।
ঈদ বাজারে এমনিতেই অনেক ভীড় থাকে। তাছাড়া ঈদের কেনাকাটায় নারী ক্রেতাদের সমাগম থাকে চোখে পড়ার মতো। কারণ বাঙালি সমাজ ব্যবস্থায় পরিবার পরিজন আত্মীয় স্বজনের কেনাকাটার ভার থাকে মূলত পরিবারের নারীদের ওপর। যার ফলে নারীদের নিজেদের কেনাকাটার পাশাপাশি পরিবার আত্মীয় স্বজনের কেনাকাটাও করতে হয়। তাদের বারবার ছুটতে হয় ঈদ বাজারে। আর যেসব নারী ছোট বাচ্চা নিয়ে যান, তাদের কষ্ট হয় অনেক। কারণ দেশের মার্কেটগুলো এখনো নারীবান্ধব হয়ে গড়ে ওঠেনি।
বাচ্চা নিয়ে যাওয়া নারীদের নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। মার্কেটগুলোতে নেই কোনো ব্রেস্টফিডিং কর্নার। এমনকি নামি দামি ব্র্যান্ডশপগুলোতেও নেই কোনো ব্রেস্টফিডিং কর্নার বা নারী শৌচাগার।
অধিকাংশ মার্কেটে অপর্যাপ্ত নারী শৌচাগার। যে কয়টা আছে সেগুলো নোংরা ময়লায় ভরপুর এবং আলোহীন, যা অনেকক্ষেত্রে নিরাপত্তাহানিকর।
তাছাড়া যখন বাচ্চাকে ব্রেস্টফিডিং করাতে হয়, তখন কোনো দোকানের পেছনে চিপাচাপায় যেতে বাধ্য হন মা। এটা একজন নারীর জন্য অসম্মানজনক এবং অস্বস্তিকরও বটে। অনেক সময় নারীরা ত্যাক্ত-বিরক্ত হয়ে কেনাকাটা না করেই বাসায় চলে যেতে বাধ্য হন।
এসব বিষয় মার্কেট পরিচালনা কমিটি এবং ব্র্যান্ডশপ মালিকগণ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে নারী ক্রেতাদের বিড়ম্বনা এবং কষ্ট লাঘব হবে। দেশের মার্কেটগুলো নারীবান্ধব হিসেবে গড়ে উঠবে।
লেখক: সংগঠক, কলামিস্ট