মঙ্গলবার (৫ মে) জোটের পক্ষে থেকে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ অভিযোগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে অংশ নেওয়া নেতারা হলেন- বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি সভাপতি মুজাদিুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, বাসদ’র সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী, কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
বিবৃতিতে বাম জোটের নেতারা বলেন, দেশে নমুনা পরীক্ষা যতো বাড়ছে করোনা শনাক্তের সংখ্যাও ততো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মে মাসের শেষ সপ্তাহ বা জুনের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে (পিক) উঠতে পারে। এ রকম গবেষণা প্রতিবেদন থাকার পরও গত ২৬ এপ্রিল থেকে পোশাক কারখানা খুলে দিয়ে এবং আগামী ১০ মে থেকে সব শপিংমল, দোকান-পাট খুলে দেওয়ার সরকারি ঘোষণার মধ্য দিয়ে গোটা দেশের মানুষের জীবনকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
‘সরকারের ঘোষণায় বলা হয়েছিল, যথাযথ সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সীমিত আকারে ধাপে ধাপে ৩০ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে পোশাক কারখানা চালু করা হবে। কিন্তু ইতোমধ্যেই দেখা গেছে ধাপে ধাপে কারখানা চালুর বিষয়টি না মেনে এক সঙ্গে সব কারখানা চালু করা হয়েছে। ৩০ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা থাকলেও ৯০ শতাংশের বেশি শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্যবিধি ও শ্রমিকের সুরক্ষাও নিশ্চিত করা হচ্ছে না। ফলে পোশাক শ্রমিকদের অনেকেই ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন এবং কমিউনিটি সংক্রমণের ফলে সারা দেশের জনগণই মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে। এ অবস্থার নিরসন না করেই সোমবার (৪ মে) আবার ঘোষণা করা হলো, আগামী ১০ মে থেকে শপিংমল ও দোকান-পাট খুলে দেওয়া হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত জেনে-শুনে মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ীর মুনাফার স্বার্থে দেশের জনগণকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া। ’
এ সূত্রেই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমনিতেই কর্মহীন, রোজগারহীন মানুষ খাদ্যাভাবে ঘরে থাকতে চাইছে না, সে সময়ে সরকারের এমন অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত গোটা জাতির জন্য চরম দুর্ভোগ বয়ে আনবে। অবিলম্বে যে সব কারখানা স্বাস্থ্যবিধি ও শ্রমিকের সুরক্ষা মানছে না তদন্ত করে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া ও বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়া মার্কেট, দোকান-পাট না খোলার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।
একই সঙ্গে কর্মহীন, রোজগারহীন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমজীবী, নিম্ন আয়ের মানুষদের আগামী ৩ মাস নগদ আর্থিক সহায়তা ও চাল, ডালসহ ত্রাণসামগ্রী প্রদান এবং নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তদের জন্য স্বল্প মূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিও জানানো হয় বিবৃতিতে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২০
আরকেআর/এইচজে