রোববার (৫ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম এর কেন্দ্রীয় সভাপতি রওশন আরা রুশো এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শম্পা বসু এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন আরপিও বিধান থেকে রাজনৈতিক দলে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার বিধান তুলে দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা গ্রহণযোগ্য নয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচন কমিশন যাদের দায়িত্ব নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করা, সেই প্রতিষ্ঠান স্বৈরতান্ত্রিক উপায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ও অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা না করে এমন একটি মৌলিক বিষয়ে প্রস্তাবনা হাজির করলো, যা অগণতান্ত্রিক। ১০ বছরে কতটুকু অর্জন করা গেল, কতখানি গেল না, কেন অর্জন করা গেল না, কমিশনের মনিটরিং কি ছিল, এই পর্যালোচনা তাদের করতে হবে। এ জন্য কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ও অপরাপর অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তার ভিত্তিতে প্রয়োজনে সময় বাড়িয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এর সঙ্গে কমিশনের মনিটরিং থাকতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের দেশে নারী প্রধানমন্ত্রী গত ২৮ বছর ধরে ১৯৯০ সাল থেকে মাঝখানে কেবল ২ বছর বাদ দিলে ক্ষমতায় রয়েছেন। দেশের সরকারি দলের প্রধান নারী, সংসদে বিরোধী দলের প্রধান নারী, রাজপথের বিরোধী দলের প্রধান নারী, জাতীয় সংসদের স্পিকার নারী। পৃথিবীতে এমন ঘটনা বিরল। সেরকম দেশে নারীদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ এত কম কেন? এই পর্যালোচনাও হওয়া দরকার। সেই পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে কেবলমাত্র পদায়ন করে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন করা যায় না। সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি অনেক বছর ধরে করা হচ্ছে। সে দাবি না মেনে সরকার আগামী ২৫ বছরের জন্য সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন না করার বিধান রেখে আইন পাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক বাধার সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়াটিও নারী নেতৃত্ব তৈরিতে বিরাট বাধা। নির্বাচন হয় মানি, মাসল আর ম্যানিপুলেশনের মাধ্যমে। নারীর কালো টাকাও নেই, মাস্তান বাহিনীও নেই, ফলে ক্ষমতাকেন্দ্রিক দলগুলি নমিনেশন দেয় না নারীকে। যতদিন পর্যন্ত রাজনীতিতে কালো টাকা আর পেশীশক্তির দৌরাত্ম থাকবে ততদিন রাজনীতিতে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন ঘটবে না। তাই নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনে কালো টাকা আর পেশী শক্তি ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তারা বলেন, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে না পারলে, ধর্মীয় কুপমুন্ডকতা ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত করতে না পারলে এবং নারী নির্যাতন বন্ধ করে, নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো যাবে না। এ সকল বাধা দূর করতে রাষ্ট্র ও সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কোনো অবস্থাতেই রাজনৈতিক দলে নারীর ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার বিধান বাতিল করা যাবে না বরং নারীদের রাজনীতিতে ও নেতৃত্বে নিয়ে আসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০১ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২০
এমএমআই/এমএইচএম