পাশের দেশে ভ্রমণ
অনির্ধারিত এক কবরের পাশে হেঁটে যেতে যেতে
হটাতই মনে হলো
এবেলা যদি ডাক আসে
দয়াপরবশ কেউ কি সঙ্গী হবে
আবার ভাবি দয়া দাক্ষিণ্য কেউ না দেখালে
একা কোথায় যাব, সঠিক ঠিকানায় কি পৌঁছানো হবে
পাড়া প্রতিবেশী হিসাবে
যাদের পাব তাদের সাথে কি সখ্য হবে
তারা কি আমাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত
নাকি নিজেরাই মুক্তির লড়াইয়ে ব্যস্ত
অথবা আমি কি তৈরি
অবগাহন জলে পর্যাপ্ত সাঁতার কি সম্পন্ন হয়েছে
নীলের নীচে যে সবুজ ভূমি তার কর্ষিত ফসলে
আমার কি কোনো অবদান আছে, লাঙলের ফলা দিয়ে
চেরা মাটিতে কোন দাগ কি রাখতে পেরেছি
জানি রাজার সমন এলে ভাবা-ভাবির সময় মেলে না
তবু কেউ কেউ তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে পেয়াদার সাথী হয়
অপূর্ণতার অতৃপ্তি যাদের তাদের কি গতি হয়
জানতে সাধ জাগে, জানা কি একেবারেই অসম্ভব
যেতে তো হবেই, যাব, নির্ধারিত সময়ে অনির্ধারিত কবরে
শুতে যাবার আগে জানিয়ে যাব আমিও তো বেঁচে ছিলাম...
ফেরার চেষ্টায়
আমাদের নিজস্ব নগরীতে আজ বড় দুঃসময়
নগরীর ধুলো ওড়া পথে মড়ক লেগেছে
ঘাসের জানালাগুলোয় মলিন পর্দা
ওপারের বাসিন্দারা গাইছে রোগাক্রান্ত সংগীত
বৃক্ষগুলো মরা পাতায় ঝরাচ্ছে বিষাদ বাতাস
শুধু গলির মোড়ের নেড়ি কুত্তাগুলোর কোরাসে
জানতে পারছি একদা এ নগর জীবিত ছিল
নগরে পুঁতে রাখা রক্তবীজে জন্মাবে
সৌহার্দ সম্প্রীতি ভালোবাসা এ বিশ্বাসে আমরা
দূরের নগরে তেজারতি করতে গিয়েছিলাম
তেজারতির সমৃদ্ধিতে চেহারা পাল্টালে
ভুলে ছিলাম আমাদের ন্যুব্জ পিতা, পিতামহ
আর মাতারা উদ্বিগ্ন সময় কাটাচ্ছেন
দূরের নগরের শর্বরী, উর্বশী আর পারুল বালায়
মজে থাকা আমরা তাদের উদ্বেগ আমলে নেইনি
পিতা পিতামহ মাতারা ঘুমিয়ে পড়লে
আমাদের সম্বিৎ ফিরে, অনেক দেরি হয়ে গেছে
ঘাঁটে বাধা নৌকায় পা উঠাতে চাইলে
আমরা বুঝতে পারি নৌকা দুলে উঠছে
এবং আমাদের অস্বীকার করছে...
নিয়তি আমাদের দূরে ফেলে দিলে
আমরা আশ্রয় খুঁজি
কিন্তু পুরানো নগর, উর্বশীয় নগর
কেউই আমাদের দায় নেয় না
উদ্বাস্তু জীবন মেনে নেওয়া ছাড়া
আমাদের আর কোনো গত্যন্তর রইল না...
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৬
এসএনএস