ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কবিতা

এক গুচ্ছ কুত্রাপি | দ্রাবিড় সৈকত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৭
এক গুচ্ছ কুত্রাপি | দ্রাবিড় সৈকত এক গুচ্ছ কুত্রাপি

এক গুচ্ছ কুত্রাপি
দ্রাবিড় সৈকত

'কুত্রাপি' কবিতার একধরনের ছন্দপ্রস্তাবনা। অন্ত্যমিল, আদ্যমিল, অনুপ্রাস, ভাবগত-ধ্বনিগত সমন্বয়, বৈপরীত্য, আদি-অন্ত-মধ্য ছন্দ, যমক, উৎপ্রেক্ষার ভেতর দিয়ে ছন্দহীনতায় গা ভাসিয়ে আবার শৃঙ্খলায় ফিরে আসা।

ছন্দের নিয়মহীনতার এই নবতর নিয়মকেই কুত্রাপি হিসেবে আখ্যায়িত করছি।  

৩৭৬
বিপন্ন পাখির পালকে থাকে কড়াল স্রোতের বিন্যাস/
দিন নাশ দয়িতার ভাষা লয়ে ওড়ে
শায়িতা বিবাগী সুর এলোমেলো
গেলো যারা আসে নাই কোথাও কুসুম
সুসময়ের যত নামডাক
কাকের মতই তারা সঙ্গপ্রবন
শ্রবণে ঘ্রাণে মাৎসর্যে
আশ্চর্য করুণ চোখে আর্তি ও অনাদর
স্বর নকল করে 

বাঁচার থাকে বিকৃতি অকৃতীর ধুম/

৩৭৫
অতখানি সোজা নয় যত ভাবনার কানাগলি চিনো/
কিনো তো অনেক কিছু পুইশাক শ্যাম্পু
টেম্পুতে বাড়ি ফিরো রোজ
গোছগাছ করা থাকে
রোজ বাজ পরা থাকে
মস্তকে সস্তাকে বানাতে হয় জানাতে হয় দৈবাৎ 
কৈ কাত হয়ে পত্রিকা পড়ো আর হাই তুলে বলো
চলো দিনকাল ভালো নয় দেশ ছেড়ে যাই
দোহাই! মন দিয়ে দেখো মাটির পরানে আছ সুখথলি/

৩৭৪
বিলোড়িত বণিকের কেনা জাল
সেনা তাল করে বাগানোর মন্থর মাড়ুয়া
মাতলামি করার নেশা
বেশভুষা ঠিক
চিকচিকা রঙ গায়ে সকলি ইলিশ?
বলিস মোহনায় মাছ শুধু নয় গভীরতা স্রোত
জোত জমি মলিন সকাল সংসার সচকিত
ভীত ভীমরুলে ভিরমি খাওয়ার নেই কাজ
কর্ণকুহর ছাড়া সকলি বেলাজ

৩৭৩
বৈমাত্রেয় লোকালয়ে
বোকা লয়ে শূন্য বিলাপের ছায়া
কায়াহীন বিরহী তাপের শীতার্ত শীৎকার
চিৎ কার মাথা?
গীত তার ভাতা নিয়া অবসরে সুরধ্বনি শোনে
ক্ষুর ধ্বনি ঘোড়াদের চোরাদের প্রতিভা
যদি বা যুৎসই খুঁত পাওয়া যায়
খোড়াদের খোয়াবে আসে যৌবতী বোরাকের মুখ/
ঘুমে থাক জাগরণে ওসব বেয়াড়া বিকার অসুখ

৩৭২
কেন লিখি এসব ছাই
যেন শিখি কিসব নাই তার লিস্টি বিশদ
বদ ভোগান্তি আছে
খত জোগান্তি আছে
খাই দাই বাথরুমে যাই জামা জুতা পড়ি
ধরি, সব বাদ দেয়া হলো
স্বাদ স্বপ্ন ভাষা হতাশা ও হরিতকি ঋতু
থিতু হওয়া যাবে? পাবে কি পিপাসা শিল্পের?
নীল ঢেড় থাকুক আসমানে, ফুলে, ফুসরতে
ভাসায়ে নিয়ে যাক সব শবের শেষকৃত্যে বেদনায় /

৩৭১
বন্ধু নামের খোলা জীপগাড়ি সশব্দ বাগান
আগান সামনে সবুজ শ্যাওলা শলিতা স্থির
চিড় ধরা ঘন নিয়মিত আলোয়ান
শির বরাবর
চচ্চর 
চতুর্দোলায় ডুবিয়ে অন্ধকার
বন্ধ আর রাখা যায় বিগত বছর
বান তুফানে ভণ্ডুল হলে অতিলৌকিক সিঁড়ি
ঝিরিঝরি জলের মতো সমগ্রে নিগূঢ় শোন গান

৩৭০
শান্ত হও অনেক বছর বেঁচে থাকা লাগে
ক্লান্ত হওয়ার কিছু নেই
জানোতো ভাষা পাল্টে যাবে পাল্টাবে জল ও জোয়ার/
ধোঁয়ার নিয়মে গলে গলে ছড়িয়ে গড়িয়ে পড়ো
চারপাশে শ্রান্তির জংশন পীড়িত পোতাশ্রয়
জয় ধারনার দ্বন্দ্বসমাস
মাস গেলে দেয়ালে হেলান দিয়ে চিরকুট লেখে
বীর লুট হলে থাকে সম্মান সমারোহ
মোহ থেকে মুক্তি নেই জেনে এতো কোলাহল সব উদ্ভ্রান্ত/

৩৬৯
সরু গলির মাথায় নির্বাসন নিরাময়
ধীর ভাসনের ব্যবসাদার
সাদার ভিতরে আছে সব রং রসালাপ
আদার ব্যাপারি খোপে পৃথিবীর প্রশ্বাস পড়ো
বিশ্বাস বিভক্তি ব্যঞ্জনায় হাঁটুজল
কটু ফলের ফস্কা স্বভাবে করমর্দন ছিটিয়ে দিলে
মিটিয়ে দেয়ার থাকে না
রাখেনা রাঙতার দধি
নদীরাই গলি হয়ে যায় গরল প্রলাপ

৩৬৮
সন্ধ্যাকে দাঁড়াতে বলেছি বোকা
হারাতে চলেছি খোকা অর্ধোন্মাদ বিদ্যুৎ
ভুত যুদ্ধের কথায় কাঁদে
দূত বুদ্ধের ব্যথায় 
সায় দেয়া সার মনে শক্ত কণ্ঠস্বর
খণ্ড ঝরের পরে জানালার খড়খড়ি বুড়িয়েছে
নুড়ি বেঁচে দেয়ার এবড়ো থেবড়ো শহরে
কহ রে কেউ তারে
দাঁড়ায়ে অপেক্ষা ব্যতিরেকে আমরাই জোনাকি পোকা/

৩৬৭
কাঠের টেবিলে রাখো হাত ঘরময় ঘুরাঘুরি শেষে
নাটের গুরু যথারীতি হুইসেল
দুই রেল বিছানো আছে
পিছানো আছে
ঠাটের
বাটের ইয়ার্কি যত রাস্তায় নুন মাখে সারাদিন
সস্তায় চিৎকার চপ্পল টাঙ্গিয়ে রাখে
ফুৎকার কতোরাতে লুকানো
তাকানোর বিধি আছে আতাফলে জ্যান্ত হাটের

৩৬৬
সময় পোড়ার গন্ধ গিরস্ত ঘুলঘুলি
চুলগুলি প্রান্তর কারো চোখ নেই গল্পের
কল্পিত রাক্ষস 
অবশ
আত্মায় সদাচারী ডালপালা শুকনো মুকুট
লুট হয়ে গেছে যারা সম্প্রীতি স্বচ্ছল
খুটখাট পিতামহ যোজনায়
দু'জনায় একসাথে চলা দায় বলা দায় দুষ্কৃতি
নিষ্কৃতি রাশি রাশি দূরতম দেয়ালের ওপাড়ের বুলবুলি/

৩৬৫
শূন্য বাথরুমে লাল নীল বিকল ঝুলজটা
কটা আঙ্গুল চেঁচামেচি বিকৃত
প্রীত পাতাদের হলুদ অবসান বিবর্ণ বারান্দায়
শীত লেপ্টে গেছে কোমড়ভক্তির কাদায়
হাদায় হতোদ্যম
দম উৎপ্রক্ষার অবিশ্বাস 
ঘাস লজ্জা বোঝেনি তাকে টোস্ট গোলমরিচের
ঝোল ঝরিছে কেমন হালকা এমন বলে
চলে গেছো বহুদিন খরতর টানে এতো ভুলফাটা

৩৬৪
পোকাদের পাখনায় পোতা থাকে রাজপথ
লাজব্রত যতখানি অর্জিত তারচেয়ে বেশি
দেশি বিদেশি চাপা সংস্কার
জং ধারা পুরাতন অগা মগা সমুচার
কমু কার দুয়ারে দুষণ
ভুষণ ব্যাবসায়ী আসে নগদের আশায়
সায় দেয়া মুশকিল
জোশ দিল
পিলপিল করে আসে খোকাদের কাঁচামত

৩৬৩
কেমন করে তারা জ্বলে জানা আছে
ডানা আছে পালক সমেত
স্বেদ বিন্দু থেকে উড়ানোর কৌশল জানি
ভেদ সিন্ধুর থেকে বড়ো
ইন্দুরে মনোভাব
বনোপথে বিরক্ত বেশুমার বৈতাল
ছাল তোলা লবনের কাঙ্খিত করোজঙ্গল
মঙ্গলবারের মধু রোদ
খোদ আত্মার আছে আহ্লাদ আতরের দঙ্গল

৩৬২
এতো বাজাও কেন
সেতো বেজায় ভালো শুনেছি
গুনেছি গুনাগারের নাম গোবেচারা
তবে তারা কাঠামোর সাথে কান্নাকাটি করে
রান্নাচড়ানোর বোকাসোকা ঘরে
ভরে দেয়া উৎপাত
যুতসই যোগানের জোয়ারি সমাহার
জমা তার যত আছে
ক্ষমা আর তত গাছে ধরে?
সাজাও সায়ানাইড ভালোবাসি দুধভাত

যোগাযোগ

বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৭
এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কবিতা এর সর্বশেষ