ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কবিতা

আসমা চৌধুরীর একগুচ্ছ কবিতা

কবিতা ~ শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২০
আসমা চৌধুরীর একগুচ্ছ কবিতা

আসমা চৌধুরীর জন্ম বরিশালে। সাহিত্য সমাজের তথাকথিত ডামাডোল থেকে দূরে আপনমনে সাহিত্য চর্চা করে চলেছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে লিখছেন কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দশেরও অধিক। প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে 'আকাশী রংয়ের মেয়ে', 'এই দুঃখটুকু রেখে দিলাম', 'রোদ্দুরে ধুয়ে যায় ফর্সা আঙুল', যৌথকাব্য সংকলন- 'পাঁচ পাতার অরণ্য', 'ত্রিবেণী কাব্য' উল্লেখযোগ্য। 

শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত আসমা চৌধুরী। তিনি বর্তমানে বরিশালের বেগম তফাজ্জল হোসেন মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক।



বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য এ কবির একগুচ্ছ কবিতা পত্রস্থ করা হলো।


দ্বন্দ্ব

সেইভাবে আমি তোমাকে কিছুই দিতে পারিনি
খোলা ছাদ, পাতাঝরা দিন, রাতের শিশির
পাশাপাশি দাঁড়ালে টের পাই সবুজ বৃক্ষগুলি
মানুষের ভীড় দূরে সরে যায়, আমি আর তুমি।

কোনো ভাঙাই কোনোদিন জোড়া লাগে না
তবু কাতরতা, দূর থেকে শুনে যাই বর্তমান সংবাদ
পাতার কাছে, শাখার কাছে মেঘ বেঁধে রাখি
পেছনে দাঁড়াই, আস্তে হাঁটি, যেন এই মুখ
লুকিয়ে থাকুক সুখীর দরজা থেকে।

শীত নামলে তোমার কষ্ট হতো 
শীত এসেছে, কদিন টুপি-মাফলারে জড়িয়েছি খুব
হিসেব করে দেখি কত বয়স পার করেছ, কত পাখি ডাকে রোজ।

দ্বন্দ্ব শুধু কথায় নয়, মনে হয়, শরীরে হয়, ক্ষমতায় হয়
দ্বন্দ্ব আছে বলেই তোমাকে এত মনে পড়ে!


মাটির ছলা

ভেতরে রয়েছে বীজ বাইরে গজিয়েছে চারা
তুমি তার জল হও, গোপন বাঁচা-মরা
একদিন রোদ লাগে, ছায়া-অন্ধকারে দুইদিন কাটে
তিনদিন ঘর ভরে ওঠে ছাতিমের জ্যোৎস্নায়।

তোমার খুশিকে ধরে থাকে মাঠের রাখাল
সে বুঝি চাষের খবর জানে, ওম ভরা ভুসিহারা ধান
শরীরের গর্ত খুঁড়ে সে জানে মাটির ছলাকলা
মানুষের রাত্রিবাস স্বপ্নের মাদুলি পরে থাকা
তোমাদের সেলাই করা প্রতিটি দিনের ধারাপাত।

সব শাখা পাতার দৃশ্য হয়,
কাঠুরিয়া শান দেয় কুঠারের গায়
জল, খুশি, রোদ, ছায়া খণ্ড খণ্ড হয়...


চাবি

চাবি দিয়ে তালা খোলে অনেকেই
চাবির খেলা দেখায় কেউ
চাবি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি সারা বিকেল
কী করে তোমাকে খুলবো?

ময়ূরসন্ধ্যা মিলেমিশে ডাক দেয়
কী করে বুঝিয়ে বলি
পাশাপাশি সোফায় বসি, কোনাকুনি তাকাই
ভেতরে বাসি কান্না
তোমার আত্মার চেয়ে দূরে থাকে বন্ধন
কী করে তোমাকে খুলি?


দাগ

সব সম্পর্ক ক্ষণস্থায়ী
উঠে গেলে চেয়ারটা খালি হয়ে যায়
ধুলো মুছতে আসে অনেকেই 
বাড়িটায় এটা ওটা মলিন হয়
নতুন খাট আসে।
ভাঙা জানালাটা আবার মেরামত হয় 
একটা দাগ প্রশ্ন রেখে যায়।

চিরস্থায়ী কিছু নয় বলেই 
একটা কালো সাম্পান অন্ধকারে গলা বের করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২০ 
এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

কবিতা এর সর্বশেষ