ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ঢাকার সমাবেশে বিশৃঙ্খলা হলে দায় সরকারের: ফখরুল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২২
ঢাকার সমাবেশে বিশৃঙ্খলা হলে দায় সরকারের: ফখরুল

ঢাকা: ১০ ডিসেম্বরের জনসমাবেশে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা হলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি সারা দেশে নয়টি সমাবেশ করেছে, কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। সরকারের বাধা উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঢাকার সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার জঙ্গি নাটকসহ বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। কোনো ষড়যন্ত্র সমাবেশ বন্ধ করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

রোববার (০৪ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান ও ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মহাসচিব।

মির্জা ফখরল বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার এক সর্বনাশা প্রতিশোধ স্পৃহায় মেতে উঠেছে। সমাবেশকে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্য একের পর এক চক্রান্তজাল বিস্তার করে চলেছে। আওয়ামী সরকারের হাতে কখনোই গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকেনি। এদের ইতিহাস ঐতিহ্যে রয়েছে গণতন্ত্রের বিনাশ ঘটিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসনের উত্থান।

তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির গণ সমাবেশকে বানচাল করার জন্য সরকারের নানামুখী দমননীতি এখন সর্বসাধারণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। গতকাল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বাসার সামনে সেই বালির ট্রাকের কায়দায় চেকপোস্ট-ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ অবরোধ করে রেখেছে। এটি দেশনেত্রীর ওপর নিপীড়নের আরেকটি নতুন মাত্রা।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, একজন জনপ্রিয় নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারারুদ্ধ রেখে চিকিৎসার সকল পথ রুদ্ধ করে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী সরকার। তাঁর বাসভবন অবরোধ করে এবং জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে চরমভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আমি এই মুহূর্তে দেশনেত্রীর বাড়ির সামনে থেকে চেকপোস্ট ও ব্যারিকেড তুলে নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল রাজশাহীর গণসমাবেশ শেষে ঢাকায় আসার পথে কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু ও সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়নকে আমিনবাজার থেকে ডিবি পুলিশ উঠিয়ে ঢাকার দারুস সালাম থানায় নিয়ে যায়। এটি ঢাকার সমাবেশের আগে সরকারের চলমান দমন-পীড়নের এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। আমি অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

তিনি বলেন, সরকারি চক্রান্ত থেমে নেই। নয়াপল্টন এলাকাকে অস্থিতিশীল করার জন্য সরকারের এজেন্সিগুলো নানা ধরনের নাশকতা ঘটাতে অবতীর্ণ হয়েছে। গতকাল এই কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। এই বিস্ফোরণের পর পুলিশ আকস্মিকভাবে নেতাকর্মীদের পাইকারি হারে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।

ফখরুল বলেন, গত পরশু মতিঝিলে পরিত্যক্ত বিআরটিসির দোতলা বাসে আগুন দিয়ে বিএনপির ওপর দায় চাপাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়ে চুপসে গেছেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। অথচ তিনি বিএনপিকে দায়ী করে তারস্বরে নাশকতার কথা বলে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, বিএনপির গণসমাবেশের কর্মসূচি জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য প্রায় মাসখানেক আগে ঢাকা জেলা আদালতে জঙ্গি নাটকের অবতারণা করা হয়। বেশ কিছু দিন চুপ থেকে এখন সেই জঙ্গি ধরার নামে মেস, আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়িতে পুলিশ ব্লক রেইড দিচ্ছে। পুলিশের এই হানা মূলত বিএনপির নেতাকর্মীদের পাইকারি হারে গ্রেফতার, হয়রানি ও আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য। আমি এই ঘৃণ্য চক্রান্তের তীব্র নিন্দা জানাই তিনি। ২০১৩-২০১৫ সালের পুরনো নাটকেরই পুনরাবৃত্তি করা হচ্ছে, এই গণগ্রেফতার এবং নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে। চলছে মেস ও আবাসিক হোটেলে জঙ্গিদের উপস্থিতি সন্দেহে পুলিশের ঘেরাও অভিযান। আমরা যার নমুনা দেখলাম বনানীতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২২/আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা
টিএ/এমএইচএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।