ঢাকা: বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারসহ পাঁচ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন জোটের নেতারা।
সমাবেশে জোটের নেতারা বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার, ভুলনীতি পরিহার, দুর্নীতি-লুটপাট বন্ধ, রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও জ্বালানি ক্ষেত্রে দায়মুক্তি আইন বাতিল এবং দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান।
তারা বলেন, সরকার গত ১৪ বছরে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। এখন আইএমএফের ঋণ পাওয়ার শর্ত পূরণ করতেই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের ওপর চাপ দিচ্ছে। দলীয় লোক ও স্বজনদের মুনাফা লাভের জন্য সরকার রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে। সিস্টেমলসের নামে চুরি বন্ধ করলে ২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে। তাছাড়া দুর্নীতি বন্ধ এবং ভুলনীতি পরিবহার করলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিবর্তে কমানো যেত। কিন্তু সরকার সে পথে না হেঁটে জনগণের কাধেই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, বিদ্যুতের এই মূল্যবৃদ্ধির ফলে কৃষি, শিল্প, বাড়ি ভাড়াসহ সব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। ইতোমধ্যেই বাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির এই সময়ে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশবাসীর জন্য ‘বোঝার উপর শাকের আঁটির’ মতো হয়েছে।
বর্তমান সরকার ভোট ডাকাতির মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে উল্লেখ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট নেতারা বলেন, জনগণের ভাল-মন্দ, দুঃখ-কষ্ট বর্তমান সরকার দেখছে না। জ্বালানি খাতের জন্য সরকার এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গঠন করেছিল।
তারা বলেন, জ্বালানির দাম বাড়াতে হলে লোক দেখানো হলেও একটা গণশুনানি করতে হতো। এখন সরকার ওই লোক দেখানো গণশুনানিও করতে চায় না। নির্বাহী আদেশে ইতোপূর্বে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এবার বিদ্যুতের দাম বাড়ালো।
বর্তমান সরকার একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মন্তব্য করে তারা আরও বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে জনদুর্ভোগ ক্রমাগত বাড়বে। তাই বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সব বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে ও বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপনের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশফো মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড