ঢাকা: মা বিদিশা সিদ্দিকের কাছে বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের ছেলে এরিক এরশাদ নিরাপদ নয়। মায়ের কাছে বন্দি জীবনযাপন করছেন এরিক।
তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের বাসভবন প্রেসিডেন্ট পার্কে জন্মদাতা মা বিদিশা সিদ্দিকের কাছে এরিক এরশাদ নিরাপদ নয়। পাশাপাশি বিদিশা সিদ্দিক অর্থের লোভে প্রেসিডেন্ট পার্কে অনুপ্রবেশ করেছে। এরিক এরশাদ শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী হলেও মানসিক ভাবে সুস্থ, তাকে মুক্ত ভাবে চলাফেরা করতে দিতে হবে।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে তার ছেলে এরিক এরশাদের দেখভাল নিয়ে একপ্রকার টানাপোড়ন চলছে অনেকদিন ধরেই। মূলত এরিকের মা বিদিশা সিদ্দিক এবং এরশাদের গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের মধ্যে এই টানাপোড়ন চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিদিশা সিদ্দিকের বন্দিদশা থেকে এরশাদপুত্র এরিককে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে।
ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ জানান, ট্রাষ্ট মনে করে বিদিশা সিদ্দিকের কাছে এরিক এরশাদ নিরাপদ নয়। এরিক এরশাদকে ভালো রাখতে যা করা দরকার তার সবকিছুই ট্রাস্ট করবে। কেউ যেন ট্রাস্টের কোনো প্রকার অর্থ লেনদেন করতে না পারে এজন্য ট্রাস্ট এর পক্ষ থেকে ব্যাংক এ চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই ট্রাষ্টের যে অর্থ আছে এসবের লেনদেনে হিসাব সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সেজন্য অডিট গঠন করা হবে। বিদিশা অর্থের লোভে এসব কর্মকাণ্ড করছেন বলেও দাবি করেন ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ।
তিনি আরও জানান, এরিক এরশাদের নিজের নামের একাউন্ট থেকে তিন লাখ টাকা দিয়ে তার প্রয়োজনীয় খরচ মেটানো হবে। আর এই একাউন্টের অর্থ আসে বনানীর দোকান (২ লাখ ৪০ হাজার টাকা) এবং একটি ফ্লাটের (৬০ হাজার টাক) ভাড়া থেকে।
নিজ মায়ের কাছে যদি সন্তান নিরাপদ না থাকে তাহলে কোথায় থাকবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের গঠিত ট্রাষ্টের একমাত্র সুবিধাভোগী হচ্ছেন এরিক এরশাদ। বিদিশা সিদ্দিক যখন প্রেসিডেন্ট পার্কে আসেন তার সঙ্গে কথা হয়েছিল তিনি এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন না। তখন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন মেজর খালেদ আক্তার। বর্তমানে তিনি প্রয়াত। সে সময় আমি মূল দায়িত্বে ছিলাম না। সে সময় মেজর খালেদ আক্তার বলেছিলেন, উনি (বিদিশা সিদ্দিক) তো তার (এরিক এরশাদের) মা। সে হিসেবে উনি এরিকের দেখাশোনা করতে পারবে, তবে স্থায়ী ভাবে নয়। মধ্যে মধ্যে আসবে তার সঙ্গে দেখাশোনা করে সময় কাটিয়ে চলে যাবে।
এরিককে মুক্তভাবে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না- ট্রাস্টের তোলা এ অভিযোগকে সত্য প্রমাণিত করতে সংবাদ সম্মেলনে এরিক এরশাদের সঙ্গে ড্রাইভার মহিদুল এবং ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদের ফোনালাপের রেকর্ড শোনানো হয়। ফোনালাপে এরিক তাকে প্রেসিডেন্ট পার্ক বাসভবন থেকে উদ্ধার করার কথা বলেছেন। তাকে মা বিদিশা অন্য নারীদের সঙ্গে অবৈধ মেলামেশায় বাধ্য করাচ্ছেন বলেও ফোনালাপে অভিযোগ করতে শোনা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
ইএসএস/এসএ