ঢাকা: দেশে যদি উন্নয়ন করেই থাকে সরকার তবে তত্ত্বাবধায়কে কেন ভয় পায় প্রশ্ন করেছে ১২দলীয় জোট। ক্ষমতাসীনদের কাছে জোটের নেতারা জানতে চান, তারা জনগণের ভোট না পাওয়ার আতঙ্কে কেন ভোগেন? কেন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে ভয় পান? কেন জনগণের ওপর আস্থা হারিয়ে প্রশাসন ও পেশীশক্তি ব্যবহার করে বিনা ভোটে জয়লাভের হ্যাট্রিক করার চেষ্টা করছেন?
শনিবার (১১মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন রাস্তায় জোটের উদ্যোগে আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতন, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব প্রশ্ন করেন।
১২ দলীয় শীর্ষ নেতারা বলেন, সারা দেশে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নানাভাবে বাধা সৃষ্টি ও হয়রানি করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে গণগ্রেফতার অভিযান। নির্বিচারে বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোল এজেন্ট আওয়ামী সরকারের গণতন্ত্র আজ যুদ্ধতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিপক্ষকে গণতান্ত্রিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে হামলা-মামলা-গ্রেফতার ও নানাভাবে কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে নিজেদের জনসমর্থনহীনতার অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে।
দেশের অবস্থা ভীষণ খারাপ দাবি করে তারা বলেন, একদল গডফাদার দস্যু দেশটাকে লুটপাট করে ফোকলা বানিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করেছে। সরকারি দলের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট বানিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চাল, ডাল, আটা, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, ডিম এমনকি গরিবের প্রোটিন ফার্মের মুরগির দাম ১৩০/১৪০ থেকে ২৫০ টাকায় তুলেছে। দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। এ অবস্থার মধ্যে গণবিরোধী অবৈধ সরকার দফায় দফায় জ্বালানি গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েই চলেছে।
উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী নরেন্দ্র মোদি সরকারের ক্যাশিয়ার আদানি গ্রুপের অবৈধ অনির্বাচিত সেবা দাস সরকারের অসম গোপন বিদ্যুৎ চুক্তির মাধ্যমে দেশকে দেউলিয়া বানানোর পথে নিয়ে গেছে। অবিলম্বে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি বাতিল করতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীদের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবির পক্ষে জনজোয়ার অবৈধ সরকারকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। সংসদ ভেঙে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ দেশ ও জনগণের একমাত্র দাবি হয়ে উঠেছে।
দেশবাসীর সামনে একদফা সরকার পতনের আন্দোলনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে নেতারা বলেন, গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মানুষের ভোটের অধিকার পুন:প্রতিষ্ঠা করা হবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হাসান সাকিবের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ন্যাপের (ভাসানী) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিমসহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন এলডিপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গনি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক সংসদ সদস্য আহসান হাবীব লিংকন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জোহরা খাতুন জুইসহ ১২ দলীয় নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৩
এমএইচ/এমজে