ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

বিদ্যুৎ সেক্টর সরকারের দুর্নীতির প্রধান খাত: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
বিদ্যুৎ সেক্টর সরকারের দুর্নীতির প্রধান খাত: ফখরুল

ঢাকা: সরকার বিদ্যুৎ সেক্টরকে দুর্নীতির প্রধান খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আদানি গ্রুপের সঙ্গে জনস্বার্থ বিরোধী বিদ্যুৎ আমদানি ও সব রেন্টাল চুক্তি বাতিলের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের মাধ্যমে সরকার যখন দেশকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বির্পযের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, এরই মধ্যে উন্মোচিত হলো আরও এক বিপর্যয় সৃষ্টিকারী আদানি-বিপিডিবি চুক্তি। সরকার ৫ নভেম্বর ২০১৭ সালে ভারতের আদানি পাওয়ার (ঝাড়খন্ড) লিমিটেডের সাথে ২৫ বছর মেয়াদি ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ (কয়লা ভিত্তিক) ক্রয়ের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির আওতায় আদানি পাওয়ারকে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে দিতে হবে ১ লাখ ১৭ হাজার ০৫৮ কোটি টাকা (১ ডলার=১০৬.৩২ টাকা), যা দেশের কয়লাচালিত অন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জের তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, শুধু তাই নয়, ক্রয়মূল্যের আরেক উপাদান জ্বালানির জন্য দেশের অন্যান্য কয়লাভিত্তিক জ্বালানি মূল্যের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি মূল্য দিতে হবে আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করতে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সকল খরচসহ আদানি পাওয়ারে ব্যবহৃত প্রতি টন কয়লার মূল্য ধরা হয়েছে ২০০ ডলারের মতো। অথচ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে আদানি পাওয়ারকে টন প্রতি মূল্য দিতে হবে ৪০০ ডলার অর্থাৎ দ্বিগুণ। আদানি পাওয়ার চুক্তির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কয়লার এই চড়া দাম আদায় করতে চায়। আর এই সকল মূল্যই দিতে হবে মার্কিন ডলারে, যা বর্তমান নিম্নমুখী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে আরও তলানিতে নিয়ে ঠেকাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার অপরিণামদর্শী ভ্রান্ত নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নানাবিধ দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে যে মহা-বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠা পরবর্তী যে কোনো সরকারের পক্ষেই হবে এক বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, দেশবাসীকে জানাতে চাই, বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশের স্বার্থ বিনষ্টকারী এ ধরনের সকল চুক্তি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ সকল কালো আইন বাতিল করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য, বিকল্প ও মিশ্র-জ্বালানির সংস্থান করা হবে এবং স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাতকে পুনর্গঠন ও টেকসই করে গড়ে তোলা হবে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বর্তমান অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারকে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় অবাধ ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে জন্য দলমত জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেককে চলমান গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্যাহ, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, জেড খান রিয়াজ উদ্দীন নসু, সাঈদ সোহরাব, বাবুল আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. হানিফ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।