ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আ.লীগের হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
আ.লীগের হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে: ফখরুল

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে। সেটা পুনরুদ্ধার করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশমাতা খালেদা জিয়া।

রোববার (১৯ মার্চ) বিকেলে মতিঝিলে হোটেল পূর্বানীর হলরুমে জিয়া পরিষদ আয়োজিত ‘কর্তৃত্ববাদের উত্থান ও বিপন্ন গণতন্ত্র: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংকট হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থায়, আমরা একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে এ রাষ্ট্র লাভ করেছি। সেই রাষ্ট্রের অস্তিত্ব, রাজনৈতিক অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। সংকটটা ওই জায়গায়। এবং বিপন্ন হবার কারণ হচ্ছে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় যে কমিটমেন্ট, যে প্রতিশ্রুতি আমরা জনগণের সামনে দিয়েছিলাম, তৎকালীন যারা নেতৃত্বে ছিলেন, তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আজকের এই ৫২ বছর সমস্ত কমিটমেন্ট, প্রতিশ্রুতি তারা নস্যাৎ করে দিয়ে একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা দ্বিতীয়বারের মতো ছদ্মবেশে নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, যেটা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেনি। দেশে কোনো আইনের শাসন নেই। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে, বিনা মামলায় তুলে নিয়ে গিয়ে একই কায়দায় নাশকতা, বিস্ফোরণের মামলা দিয়ে গ্রেফতার দেখায়। মামলায় ১০০ জনের নাম দেয় ওই এলাকায়, যারা বিএনপির নেতাকর্মী। বাকি দেয় ১০০০ অজ্ঞাতনামা। পঞ্চগড়ে দিয়েছে ১৬ হাজার অজ্ঞাতনামা। এতে দুটি কাজ হয়, ওই মানুষগুলো ঘরছাড়া হয়ে যায়। বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যায়। আরেকটি হলো বিরাট বাণিজ্য শুরু হয়ে যায়, যারা ভুক্তভোগী তারাই এটা জানে।

তিনি বলেন, আমাদের ১০ দফায় পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, বর্তমান সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। কারণ এ সংসদ জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদ নয়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে কীভাবে নির্বাচন হয়েছে, সেটা আপনারা জানেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সকল দলের রাজনৈতিক আলোচনার প্রেক্ষিতে একটি কেয়ারটেকার সরকার তৈরি করতে হবে। তাদের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সে নির্বাচন কমিশন নতুন করে নির্বাচন ব্যবস্থা করবে। সে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে নতুন পার্লামেন্ট হবে, নতুন সরকার গঠন করা হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের এই সংকট উত্তরণে শুধু বিএনপির দায়িত্ব নয়। এটা সকল রাজনৈতিক দলের সকল মানুষের দায়িত্ব। দেশকে বাঁচাতে জাতিকে বাঁচাতে গণতন্ত্রকে বাঁচাতে, একটি মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এখন একটা কর্তৃত্ববাদী শাসনের দেশ। বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। মাঝে মাঝে অনেকেই প্রশ্ন করেন, আপনারা কী নির্বাচনে আসবেন না, আপনারা নাকি ৮০ সিট নিয়ে আলোচনা করছেন, পাচ্ছেন? কীভাবে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। আচ্ছা বলেন তো, সিট দেয়ার মালিক কে? দেশের জনগণ ছাড়া কি কেউ এর মালিক, জনগণ ছাড়া তো কাউকে দেখি না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ দলটাই একটা স্বৈরাচারী দল, এরা আসলে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। কিছু বললেই এরা মারতে আসবে। আর জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করে দেশকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। এখন আমরা নিরাপত্তা হারিয়ে ফেলেছি। ২০১৪ সালের পর থেকে এটা শুরু হয়েছে। সুশাসনের জন্য যে জিনিস দরকার সেগুলো বাংলাদেশে আর নাই। আমি শঙ্কিত এ দেশের জন্য। এ দেশকে নতুন করে গড়তে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আব্দুল লতিফ মাসুম, জিয়া পরিষদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর এম সলিমুল্লাহ খান, ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট ও জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।