বরিশাল: আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর পিস্তল ঠেকিয়ে অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহম্মেদ মান্না ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৪ মে) রাত ৮টার সময় বরিশাল নগরের মহাশ্মশান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- আহম্মেদ, আব্দুল হালিম, মো. জাহিদ ও সুজন। যাদের মধ্যে তিনজকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে হামলা ও পিস্তল ঠেকানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহম্মেদ মান্না। তার দাবি, গত ৫ দিন ধরে তিনি সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছেন, আর সেখান থেকে অন্যত্র গেলে তার প্রমাণ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করলেই পাওয়া যাবে।
হামলায় আহত মনা আহম্মেদ জানান, কাউনিয়া শ্মশান ঘাটের ওই এলাকায় আমরা ৮-১০ জন আ. লীগের মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত ভাইয়ের নির্বাচনী ওয়ার্ক করছিলাম। তখন আকস্মিক এক থেকে দেড়শত যুবক এসে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
তিনি আরও জানান, হামলার সময় রইস আহম্মেদ মান্না আমার কলার ধরে এবং গালিগালাজ শুরু করে। আর ওইসময় মান্না আমার পেটে পিস্তল ঠেকালে আমি আর নরাচরা করতে পারিনি। এরপর মান্নার ড্রাইভারসহ সহযোগীরা দা দিয়ে কোপ দেওয়ার পাশাপাশি আমাকে রড দিয়ে পিটিয়েছে। আমার সঙ্গের লোকজনকেও অতর্কিতভাবে মারধর করছে।
হামলার শিকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক যুবলীগের সেক্রেটারি আব্দুল হালিম বলেন, হামলাকারীদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আমরা ঘটনাস্থল থেকে সার্কিট হাউজের সামনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে যাবো বলে রিকশা জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ দেড়-দুইশত পোলাপান এসে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। মারধরের সময় ওরাই মান্নার কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। আর খোকন ভাইয়ের নির্বাচনে কাজ করার জন্যই এ মারধর করা হয়েছে বলে দাবি তার।
মান্নার সঙ্গে অনেকে ছিলে জানিয়ে জাহিদ বলেন, আমরা খোকন ভাইয়ের লোক বিধায় শুধু শুধু মারছে। আমাদের মারধরের পাশাপাশি মনারে তো পিস্তল ঠেকাইছে, এছাড়াও রড, লাগি ও দা দিয়ে হামলা চালাইছে। মনার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতও রয়েছে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইস আহম্মেদ মান্না বলেন, পুরোটাই মিথ্যা অভিযোগ, আমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, আজ ৫ দিন ধরে আমি সিসি ক্যামেরার আওতায় আছি। যারা বলে আমি কাউকে অস্ত্র ঠেকাইছি বা মারধর করছি তারা মিথ্যা বলছে। প্রয়োজনে আপনারা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নেন, আর তা নিলেই বুঝতে পারবেন সিসি ক্যামেরার আওতাধীন এলাকায় থেকে অন্য এলাকায় কিভাবে যেতে পারি। আমি অন্যায় করে থাকলে সঠিক তথ্য নিয়ে আমার বিচার করেন।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের সঙ্গে আমাদের ঝামেলা ছিলে, তারা নৌকাকে সামনে রেখে আমাদের বরিশাল থেকে বিতারিত করতে। তাই বিভিন্নভাবে তারা মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে এবং যাতে বরিশালে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ভাই না আসতে পারে সেজন্যও ষড়যন্ত্র করছে।
এ বিষয়ে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, শুধু শুধু নৌকার নির্বাচন করায় তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। নৌকার প্রচারনা ও নৌকার বিজয় কেউ বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করলে, সে যতই শক্তিশালী হোক না কেন আমরা তাদেরকে দাতভাঙ্গা জবাব দিবো এবং বরিশাল থেকে বঞ্চিত ঘোষণা করবো।
এদিকে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ের দপ্তর সেলের প্রধান অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক।
আর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম-বিপিএম(বার) জানিয়েছেন, এখনো নির্বাচনী কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। এরআগে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। যারাই জড়িত থাকুক না কেন কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৩ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৩
এমএস/ এসএম