ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের পকেট ভারী করতে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। সে জন্য তারা জিনিসের দাম কমাতে পারবে না।
শনিবার (২০ মে) বিকেলে ঢাকায় এক জনসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মতিঝিলে এ জনসমাবেশের আয়োজন করে।
মোশাররফ বলেন, আজ সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তারা এই স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে চায়। যেখানেই আওয়ামী লীগ, সেখানেই গণতন্ত্র হরণ হয়েছে। আজ দেশে গণতন্ত্র নেই। গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সরকার যা তা করে যাচ্ছে। জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দেশের মানুষ আর এই সরকারকে চায় না।
এ সময় এক দফা এক দাবি, এই সরকারের পদত্যাগ- এমন দাবি তোলেন বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা। তখন উপস্থিত নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সরকারকে বিদায় করতে শুধু মিছিল আর স্লোগান নয়, আমাদের রাজপথে নামতে হবে।
মোশাররফ বলেন, যারা প্রশাসনে আছেন, তাদের ভাবতে হবে, তারা দেশের প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এ দেশের মানুষের টাকায় আপনারা বেতন পান। এখন আর এই অবৈধ সরকারে কথা বা নির্দেশ মানবে না। এখন সংশোধন হোন। কোনো অবৈধ নির্দেশ মানবেন না। একদিন বিএনপিও ক্ষমতায় আসবে। জনগণের সরকার আসবে, আপনাদের কোনো ক্ষতি হবে না। আপনারা নিশ্চিত থাকেন। জনগণের হয়ে কাজ করুন।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, পুলিশের বলে বলীয়ান হয়ে অনেক কথা বলা যায়, একা আসেন দেখি কতক্ষণ থাকতে পারেন ঢাকায়। পুলিশ ভাইদের বলতে চাই, জনগণের টাকায় আপনাদের বেতন হয়, ভুলে যাবেন না। যে পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়েছে আমাদের নামে, তাদের তালিকা করা হবে। আপনারা আওয়ামী লীগের দলীয় বাহিনী হবেন না। পঞ্চাশ বছর পর হলেও অবৈধ ও জোর করে ক্ষমতায় থাকার বিচার হবে। আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যখন আমাদের ওপর হামলা করবে, তখন কি আমরা বসে থাকব? না, আমরা আর বসে থাকব না। আমরা শুধু বাঁশি বাজাব না। প্রতিহত করতে হবে। আমরা যদি এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে না পারি। তাহলে আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকবে না। এরা দেশকে বিলীন করে দেবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আলীম, সহ-সম্পাদক আনিছুর রহমান তালুকদার খোকন, মহিলা দলের সভানেত্রী মির্জা আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিল্টন প্রমুখ।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মতিঝিল পীরজঙ্গি মাজারের সামনের সড়কে এ জনসমাবেশ শুরু হয়। এতে প্রখর রোদ উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা সড়কে ও মঞ্চের সামনে বসেছিলেন।
এর আগে বেলা বাড়ার সাথে সাথে মতিঝিল এলাকায় ও এর আশপাশের এলাকা বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে।
দুপুরে পর সমাবেশ ও মিছিল শুরুর কথা থাকলেও বেলার সঙ্গে সঙ্গে মাজারের সামনে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটের ছোট ছোট মিছিল আসতে থাকে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে জনসমাবেশ কেন্দ্র। সমাবেশ কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। চার দিনের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ১০ বিভাগে ও ১৮ জেলায় আজ এ জনসমাবেশ করছে বিএনপি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
টিএ/আরএইচ