ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চায় সরকার: রব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৩
সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চায় সরকার: রব ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

রোববার (২৫ জুন) রাজনৈতিক সংকট, চলমান গণআন্দোলন ও জনপ্রত্যাশা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’।

সভায় আ স ম আবদুর রব বলেন, আজকে দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন। সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাদের কাছে ক্ষমতার চেয়ে বড় কিছু নেই। দেশ, জনগণ, ভৌগোলিক অবস্থা ও দেশের দরিদ্র মানুষের গুরুত্ব তাদের কাছে নেই।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র আজ স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার শৃঙ্খলে আবদ্ধ। এক মন্ত্রী আরেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলেন। একজন পক্ষে বলেন, আরেকজন বিপক্ষে বলেন। এই সরকার মিথ্যাবাদী, জনগণ তাদের আর বিশ্বাস করে না। অন্তর থেকে মানুষ তাদের বিদায় করে দিয়েছে, এখন তাদের দাফন করার সময়।

তিনি আরও বলেন, যারা জলপথে, স্থলপথে ও আকাশপথে বাংলাদেশের সীমানা রক্ষা করছেন তাদের বলছি, আপনাদের সবাইকে চৌদ্দ গোষ্ঠীর হিসেব নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আপনাদের বেতন-ভাতা জনগণের টাকায় হয়। সুতরাং কাউকে পালাতে সহযোগিতা করবেন না। যারা স্বৈরাচারী সরকারকে সহযোগিতা করছে তাদের বিদেশে পালাতে দেবেন না। কারণ তাদের বিচার করতে হবে।

জেএসডির সভাপতি বলেন, গতকালের বিভিন্ন পত্রিকায় দেখলাম সুইচ ব্যাংক থেকে ১০ হাজার কোটি ডলার প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশিরা। তারা বুঝতে পেরেছে, এই পাচার করা টাকা তারা ভোগ করতে পারবে না। তাই তারা টাকা এদিক ওদিক করার চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশের ভূরাজনীতির নিয়ে তিনি বলেন, সরকারের অপরিণামদর্শীতায় ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশ বড় সংকটে পড়েছে। সরকার কোনো রকম কথাবার্তা ছাড়া জনগণকে জুজুর ভয় দেখাচ্ছে। সরকার বলেছে, আমাদের সীমানার কোনো অংশ কাউকে দেব না। দেশের মানুষ তো কাউকে বলে নাই সীমানা দিয়ে দিতে। এমনকি সরকারের কোনো অধিকার নেই জনগণের সীমানা কাউকে দেওয়ার।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, নব দলের অংশগ্রহণ ও মানবাধিকার এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে দেশে চরম অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হবে। দেশের লাখ লাখ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছিল তাদের নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। তার পরিবর্তে বর্তমান সরকার দলীয় শাসন কায়েম করেছে। জনগণ যেন ক্ষমতার মালিক না হতে পারে তার ব্যবস্থাও করেছে সরকার।

গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ এই নেতা বলেন, সরকারের সুদৃষ্টি রয়েছে দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোরদের দিকে। আজ মন্ত্রণালয় থেকে একেবারে গ্রাম পর্যন্ত দুর্নীতি পৌঁছে গেছে। দেশের সব স্তরে আজ দুর্নীতি। এমনকি বাজারেও তাদের দলের লোকেরা চাঁদাবাজি করছে। আর স্থানীয় নির্বাচনে তারা জনগণকে বলে নৌকা মার্কায় ভোট দিলে নির্বাচনে আসবেন, না হলে কেন্দ্র আসার দরকার নেই। সংসদ সদস্যরা তাদের লাইসেন্স করা অস্ত্র দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাচ্ছে।

সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনগণ, মুক্তিযোদ্ধা ও ভবিষ্যতের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে বিদায় করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তা না হলে জাতির কাছে আমাদের জবাবদিহিতা করতে হবে।

জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত কাইয়ুম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২৩
এসসি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।