ঢাকা: ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে এবং সে লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নাশকতা বা সহিংসতা করে বিএনপি নির্বাচন ঠেকাতে পাারবে না বলে আওয়ামী লীগ ও সরকারের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, এ নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির যে কোনা প্রচেষ্টা ও সহিংসতাকে প্রতিহত করা হবে এবং পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার আরও কঠোর হবে। এখন নির্বাচন যথা সময়ে অনুষ্ঠানকে সরকার বাধ্যবাধকতা হিসেবেই নিয়েছে।
বুধবার(১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এই নির্বাচনের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে বিএনপিসহ দলটির যুগপৎ আন্দোলন সঙ্গীরা। গত ৩১ অক্টোবর থেকে বিএনপি ধারাবাহিক অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে আসছে। এ পরিস্থিতিতে দেশে ইতোমধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির আরও বড় ধরনের কর্মসূচি আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বিএনপির এই দাবিকে অনেক আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি যে কোনো পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা প্রতিহত করে যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ ও সরকারের কঠোর অবস্থানও অব্যাহত আছে। নির্বাচন ঠেকাতে সহিংসতা, সন্ত্রাস, নাশকতা প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা রাজপথে অবস্থান নিয়েছেন। একই সঙ্গে তফসিল ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমও বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হবে বলে দলের নেতারা জানান।
এদিকে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে নেতারা জানান, নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি ও দলটির সঙ্গীরা চেষ্টা করলেও তারা সফল হবে না। যদিও দলটি ইতোমধ্যেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে সহিংসতা, নাশকতা শুরু করেছে। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এখন পরিস্থিতি যাতে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যায় তার জন্য সরকার আরও কঠোর অবস্থানে যাবে। যে কোনো মূল্যে সন্ত্রাস দমন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতিও রয়েছে বলে ওই নেতারা জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, জানি বিএনপি যেভাবে অবরোধ দিচ্ছে তাতে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে, হচ্ছে না তা বলা যাবে না। এসব করে তারা খুব বেশি কিছু করতে পারবে, এটা আমার মনে হয় না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য নেমে পড়েছে। নির্বাচন যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোও গত ২৮ অক্টোবরের পর বুঝতে পারছে যে স্বাভাবিকতা বাধাগ্রস্ত হয়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হলে শুধু আমরা নয় তারাও শান্তিতে থাকতে পারবে না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীরা মাঠে আছেন, আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীও রয়েছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে উপযুক্ত জবাব পেয়ে যাবে, ছাড় দেওয়া হবে না। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি আসতেও পারে । তবে তারা না এলে অনেক দলই আসবে, প্রার্থীর অভাব হবে না। তফসিল হয়ে গেল নির্বাচন, নির্বাচনের মত হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, একটা রাষ্ট্রকে সংবিধান অনুযায়ী চলতে হয়। সংবিধানকে অনুসরণ না করা মানে দেশের বিরোধিতা, সেটা হবে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। দেশের জনসাধারণ ভোট দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছে, তারা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। তফসিল হয়ে গেল, এই নির্বাচনে বাধা দেওয়া বা ভোটের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না। এই নির্বাচনে কোন দল এলো বা এলো না তার জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না। জনগণের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।
বাংলাদেশ সময় ০৯২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
এসকে/এমএম