ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার ভোটের নাম করে ভিক্ষার চাল বিতরণ করছে: মান্না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
সরকার ভোটের নাম করে ভিক্ষার চাল বিতরণ করছে: মান্না

ঢাকা: সরকার ভোটের নাম করে ভিক্ষার চাল বিতরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন ৭০ শতাংশ ভোট পড়বে আওয়ামী লীগের।

তাহলে গুলশান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্রগ্রামে কত শতাংশ ভোট পড়েছিল। কেউ কি এসেছিল ভোট দিতে। এসব টালিবালি করে চলবে না। প্রচণ্ড নির্যাতনের মুখেও আমরা দাঁড়িয়ে আছি। শুধুমাত্র যে দাঁড়িয়ে আছি তা নয় সামনে এগিয়ে যাবার জন্য পথ হাঁটছি। যত ধরনের নির্যাতনই চালান আন্দোলন বন্ধ করতে পারবেন না৷ এ নির্বাচন জালিয়াতির নির্বাচন।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাজার সিন্ডিকেট, একতরফা নির্বাচন ও পরিকল্পিত সহিংসতার বিরুদ্ধে গণতন্ত্র মঞ্চের আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ভোট কেমন এবং কীভাবে হবে তা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ভালো জানে, তাকে জিজ্ঞাসা করেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন পুলিশ একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে গিয়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। যিনি দলের চেয়ারম্যান তার রুম বন্ধ করে কথা বলেছেন। সে দলের সেক্রেটারি সাহেব বাইরে ঘুরে বেরিয়েছেন। কিন্তু এত কিছুর পরও তিনি কথা দিতে পারেননি। অনেক অনুরোধ করার পরও সে দলের চেয়ারম্যান বললেন, আমি ভিক্ষার চাল নিয়ে নির্বাচন করতে পারব না। তার মানে সরকার ভোটের নাম করে ভিক্ষার চাল বিতরণ করছেন।

তিনি বলেন, জি এম কাদের এ কথা বলার পর আর কারো কি কোনো কথা বলার বাকি থাকে। তবে বলেছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা, যিনি নারায়ণগঞ্জের খুব ডাকসাইটের নেতা। যাকে সারা বাংলাদেশে চিনে। আমি দেখলাম আ. লীগের সেই নেতা আজকে টেলিভিশনে বলছেন, ভোটের কোনো উৎসাহ পাচ্ছি না। কোনো আনন্দ দেখতে পাচ্ছি না, এ ভোট করে কোনো মজা পাচ্ছি না।

মান্না বলেন, গ্রামের মানুষকে ফোন করে জিজ্ঞেস করেন তারা কি ভোট দিতে যাবে। তারা বলে, বাজারে তো ভোটের কথা নেই। চায়ের দোকানে ভোটের কথা নেই। ভোট যে হবে তা রেডিও টেলিভিশন বলে কিন্তু মানুষ বলে না।

আগামী নির্বাচনে বিরোধী দল হবে স্বতন্ত্র পার্টি এমন মন্তব্য করে মান্না বলেন, এ পাতানো নির্বাচন করার পর একটা প্রশ্ন আসে। তাহলে প্রধান বিরোধী দল কে হবে। সরকার তো হয়েই আছে, জাতীয় পার্টি কি বিরোধী দল হবে। আমি বলি আরে ভাই নিজের স্ত্রীর আসনই কনফার্ম হয় না, তা নিয়ে কি যে কান্নাকাটি। আর বাকি যারা কনফার্মেশন পেয়েছেন সেই ২৪ জন বলেন, আমাদের কাকে বাদ দিয়ে কাকে যে রাখে, তা তো বুঝতে পারছি না। অতএব অনেকে বলে এবার বিরোধী দল হবে স্বতন্ত্র পার্টি। দুনিয়ার কোথাও কি এমন হয়েছে। এ ফোর টোয়েন্টি মার্কা নির্বাচন নিয়ে বড়াই করার কিছু নেই।

বিরোধীদলের নামে অপবাদ দেওয়ার জন্য সরকার এখন উঠেপড়ে লেগেছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, ট্রেনের স্লিপার কি হাতুড়ি বাটাল দিয়ে কাটা যায়। অক্সিএসিটেলিন শিখা দিয়ে ট্রেনের স্লিপার কাটতে হয়। তাহলে কারা করল এইটা, আমরা বলেছি তদন্ত করেন। কাদের কাছে অক্সিএসিটেলিন থাকতে পারে, কারা পেতে পারে। কিন্ত সরকার কোনো জবাব দেয়নি।

মান্না বলেন, তবে সব থেকে নিন্দনীয় হচ্ছে পুলিশ কমিশনার সাহেব একটা বিবৃতি দিয়েছেন। তাহলে মনে হবে আওয়ামী লীগের পেডে একটা বিবৃতি লিখে পাঠিয়েছে সেটা উনি পাঠ করেছেন। উনি বলেছেন, সমস্ত নাশতার জন্য দায়ী বিরোধী দলগুলো। যেখানে পুলিশের কোনো তদন্তই হল না সেখানে উনি কীভাবে জানলেন। নুরুল নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, উনি নিজ চোখে দেখেছেন পোশাক পরে ট্রেনে উঠে কিছু লোক আগুন দিয়েছেন। তাহলে কেন এর তদন্ত হলো না। সত্য এমন একটা জিনিস যা কখনো চাপা থাকে না।

বিরোধী দলগুলোকে দমন করার জন্য সরকার এবং তার পেটোয়া বাহিনী এক হয়ে কাজ করছেন উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মাঝেমধ্যে সরকার বলে কই তোমাদের আন্দোলন তো দেখতে পাচ্ছি না। আমি বলি, পুলিশের এ অত্যাচার বন্ধ করেন তারপরে দেখবেন আপনারা (আওয়ামী লীগ) তো ঘর থেকেই বের হতে পারবেন না। ৭ তারিখ নির্বাচন তো অনেক দূরের হিসাব।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিসহ গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যান্য নেতারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
ইএসএস/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।