ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জি এম কাদের ও চুন্নুকে জাপা থেকে অব্যাহতি রওশন এরশাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪
জি এম কাদের ও চুন্নুকে জাপা থেকে অব্যাহতি রওশন এরশাদের

ঢাকা: জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ ক্ষমতাবলে পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে রওশন এরশাদ নিজেকে পার্টির চেয়ারম্যান ও কাজী মামুনুর রশীদকে পার্টির মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করেন।

রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় গুলশানে রওশন এরশাদের বাসায় এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।  

কাজী মামুনুর রশীদ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ম্যাডাম নিজেই আজ পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে নিজেকে পার্টি চেয়ারম্যান ও আমার নাম মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করেন।

সভায় দলের বহিষ্কার হওয়া নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে বেগম রওশন এরশাদ বলেন, আমি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কো-চেয়ারম্যান এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক- এ মর্মে ঘোষণা করছি যে, বিগত দিনের জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক ব্যর্থতা পর্যালোচনা করে আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছি।

আমাদের প্রাণ প্রিয় সংগঠন জাতীয় পার্টিতে এখন একটি ক্রান্তিকাল বিরাজ করছে।  

এক. দ্বাদশ নির্বাচনের আগে পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বক্তব্য ও বিবৃতি এবং দ্বাদশ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাদের ভূমিকা পার্টিকে মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

দুই. জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৭টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে ২৬টি আসনে সমঝোতা করা এবং আসন সমঝোতার পরেও জন সম্মুখে অস্বীকার করে- দেশবাসী এবং পার্টির মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে পার্টিকে মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।

তিন. ২৬টি আসন সমঝোতার পর বাকি আসনের প্রার্থীদের রাজনৈতিকভাবে জনগণের বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মহাসচিব তাদের কোনো খোঁজ খবর না নেওয়ার ফলে ভোটের মাঠে পার্টি চরমভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

চার. নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ায় পার্টির নেতা কর্মীরা তার প্রতিবাদ করার অধিকার রাখেন। এ প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনো রূপ আলোচনা কিংবা সান্ত্বনা না দিয়ে ক্রমাগত বহিষ্কার ও অব্যাহতির মাধ্যমে পার্টির অস্তিত্ব নষ্ট করা হয়েছে।

পাঁচ. পার্টির অবস্থা সার্বিকভাবে বিবেচনায় করে আমি গত ২২ জানুয়ারি পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে দলে ঐক্য ফিরিয়ে এনে সব বহিষ্কার ও অব্যাহতির আদেশ বাতিল করে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা তা আমলে নেননি।  

ছয়. এ ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পল্লীবন্ধুর ৬৬৮ জন নেতাকর্মী পার্টি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করায় দলে বিরাট সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

আমার সিদ্ধান্ত:

এক. এমতাবস্থায় উল্লেখিত সংকট নিরসনে পার্টির নেতাকর্মীদের অনুরোধে এবং পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১ ধারায় বর্ণিত ক্ষমতাবলে আমি পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে জি এম কাদের ও মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি প্রদান করলাম।

দুই. নেতাকর্মীদের অনুরোধে আমি পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।

তিন. পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত আমি কাজী মো. মামুনুর রশিদকে মহাসচিবের দায়িত্ব প্রদান করলাম। তিনি সার্বিকভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

চার. পার্টির অন্যান্য পদ পদবি নিজ নিজ অবস্থায় বহাল থাকবে এবং পার্টির যেসব নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে কিংবা বহিষ্কার করা হয়েছে এবং যাদের পার্টির কমিটির বাহিরে রাখা হয়েছিল তাদের পূর্বেকার স্ব-পদে পূর্ণবহাল করা হবে।

পাঁচ. শিগগিরই পার্টির জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪
এসএমএকে/এসএএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।