ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বির্তকের সুযোগ নেই: মির্জা ফখরুল 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বির্তকের সুযোগ নেই: মির্জা ফখরুল 

ঢাকা: জিয়াউর রহমানকে ছোট করা, অসম্মান করা, খাটো করা মানে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  

তিনি বলেছেন, ’৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক করার কিছু নেই। এটি বিতর্ক করলে দেশের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক করা হবে। যারা বিতর্ক করে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নয়।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  

এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বীক্রম।

ফখরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধে যারা প্রাণ দিয়েছিল, যারা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিল প্রত্যেকের লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র। এ সরকার ১৫ বছরে গণতন্ত্র নিয়ে কোনো কাজ করেনি বরং ক্ষমতায় টিকে থাকতে নির্বাচন ক্ষমতাকেন্দ্রিক ব্যবহার করেছে। এমনি যারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, তাদেরকে জেলে পুড়েছে।  

তিনি বলেন, দেশটা দুইটা ভাগে ভাগ করেছে সরকার। একটি হলো আওয়ামী লীগ, আর একটি বিরোধীদল। শুধু তাই নয়, বর্ণবাদ সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলীয় নেতা কর্মীদের বাড়ি ঘর, দোকান ও ব্যবসা দখল করে নিচ্ছে। সাংবিধানিক কোনো প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লোক ছাড়া নিয়োগ পায় না।  

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন করার মতো পরিস্থিতি আজকে বাংলাদেশে নেই। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জনগণ বিশ্বাস করলেও আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। আজকে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। ৭৫ সালে আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করেছিল। এখন তারা বাকশাল টু কায়েম করেছে।  

তিনি বলেন, আমরা রাজপথে কর্মসূচি পালন করেছি, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করবে। আমরা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আন্দোলন চালিয়ে যাব। ১৮ কোটি মানুষের হাতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে না পারা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, এটাই আমাদের আজকের শপথ।  

তরুণদেরকে আরও শক্ত করে জেগে উঠতে হবে জানিয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাদের একমাত্র কাজ মানুষকে জাগিয়ে তোলা। সংগঠিত করা। এরমধ্যে দিয়ে ১৫ বছর ধরে যে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি তার পতন নিশ্চিত করা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্য মেজর হাফিজ আহমেদ বলেন, জিয়াউর রহমান কার লেখা পাঠ করেছেন, কে তার কাছে লিখে দিয়ে গেছেন? ’৭১ সালের ২৫ মার্চে দুঃসময়ে মাহেন্দ্রক্ষণে কাউকে তো খুঁজে পাওয়া যায়নি? তখন আপনারা কোথায় ছিলেন। ২৫ মার্চ রাতে ঘোষণা দেওয়া জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে একটি টেপ রেকর্ড নিয়ে গিয়েছিলেন তাজউদ্দিন আহমদ। কিন্তু তিনি তো ঘোষণা দেননি। তিনি বলেছিলেন আমি দেশ ভাগের দায়িত্ব নিতে পারব না।  

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বড় নেতা, তাকে আমরাও সম্মান করি। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের সব কৃতিত্ব একজনকে দেবেন কেন? যারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে রক্ত দিয়েছেন তাদের একটু কৃতিত্ব দেন। ইতিহাস অনেক কিছু লেখা হয়নি, ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।  

বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি মন্তব্য করে মেজর হাফিজ বলেন, ‘৭৫ সালে বাকশাল চালু করলেন। আজকে কোথায় গেল সেই গণতন্ত্র? আজকে দেশের ভোটাধিকার নেই, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। আমরা কোনো দেশের প্রভুত্ব মেনে নেব না। আজকে কেন সীমান্তে নিরীহ মানুষ কেন হত্যা করা হচ্ছে। বাঙালিরা কাপুরষ হিসেবে প্রতিষ্ঠাতা করা হচ্ছে। প্রতিদেশের মালিকানা ফিরিয়ে আনতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।  

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আব্দুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
টিএ/এসএএইচ


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।