২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল ত্রিমুখী সমঝোতার নির্বাচন উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ঐ নির্বাচনের আগে তৎকালীন সেনা প্রধান মঈন উ আহমেদ ও ফখরুদ্দীনের সাথে ভারত ও হাসিনার নির্বাচনের আগেই সমঝোতা হয়।
শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) বিকেলে লালবাগ হাজী আব্দুল আলীম ঈদগাহ্ মাঠে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের লালবাগ থানা কর্মী ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সমঝোতা হয়েছিল আওয়ামী লীগকে সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী ঘোষণা করতে হবে। এতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে মঈন উ আহমেদ ও ফখরুদ্দীনকে নিরাপদে বিদেশে চলে যেতে সহায়তা করবে এবং নিজেদের মনমতো করে সংসদে সংবিধান সংশোধনসহ যে কোন বিল পাস করতে পারবে। ফলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা পাকাপোক্তা করা যাবে। আর বিনিময়ে আওয়ামী লীগ ভারতের সেবাদাস সরকার হয়ে থাকবে। ভারতের যা প্রয়োজন বাংলাদেশ থেকে তা নিয়ে যেতে পারবে। আর ভারত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে ভারত ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে পারেনি। এদেশের ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশ ছাড়া করেছে।
এসময় তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে প্রথমেই পিলখানা বিদ্রোহের নামে দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যদের হত্যা করেছে। এরপর ভারতের পরামর্শে এদেশ থেকে ইসলামকে নির্মূল করে দিতে জামায়াতে ইসলামীকে নিঃশেষ করার কাজ শুরু করে হাসিনা। জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে জেল, জুলুম, নির্যাতন, হামলা-মামলা, খুন, গুম ও বিচারিক হত্যা চালিয়েছে। জামায়াত নেতাদের হত্যা করতে যেই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে আজ সেই ট্রাইব্যুনালেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতারী পরোওয়ানা জারি হয়েছে।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফসল অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে খুনি হাসিনাকে ধরে এনে আদালতে হাজির করা। তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার ক্ষমতায় আসেননি। আপনাদেরকে এনে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। ছাত্র-জনতা আপনাদেরকে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করার মহান দায়িত্ব দিয়েছে। সেই দায়িত্ব পালন করতে আপনাদের কত দিন সময় লাগবে এবং কি কি সংস্কার করবেন, কখন নির্বাচন দিবেন এটা জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে। করা জরুরী।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও লালবাগ থানা আমীর ড. মুহাম্মদ শামীমুল বারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী ও সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক হাজী হাফেজ এনায়েক উল্লাহ। অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যক্ষ আহসান উল্লাহ, লালবাগ থানার সাবেক আমীর আলহাজ¦ সাব্বির আহমেদ, চকবাজার দক্ষিণ থানা আমীর আনিছুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭,২০২৪
এমএম