ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

খালেদার দেশে ফেরা

যাত্রী ছাড়া কেউ ঢুকতে পারছে না বিমানবন্দরে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫
যাত্রী ছাড়া কেউ ঢুকতে পারছে না বিমানবন্দরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রধান ফটকেই কড়া নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিদেশগামী যাত্রী ছাড়া কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

প্রধান ফটক পার হতে দেওয়া হচ্ছে না খালেদাকে অভ্যর্থনা জানাতে আসা দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকেও।

দীর্ঘ দুই মাস পাঁচ দিনের যুক্তরাজ্য সফর শেষে শনিবার (২১ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা খালেদার। তার আগে বিকেল ৪টার দিকে বিমানবন্দরের প্রধান ফটকে দেখা যায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কড়া অবস্থানে রয়েছেন। তারা যাত্রী ছাড়া কাউকেই বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। ব্যক্তিগত বা ভাড়া গাড়ি নিয়ে আসা যাত্রীদের প্রধান ফটকেই থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে তাদের পায়ে হেঁটে যেতে হচ্ছে বিমানবন্দরের ভেতরে। এমনকি সাংবাদিকদেরও প্রধান ফটক পার হতে দিচ্ছেন না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মাঝেমধ্যে ভিআইপি ও বিদেশিদের বহনকারী দু’একটি গাড়িকে সরাসরি এয়ারপোর্টে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে কেবল।

ভেতরে ঢুকতে না পেরে প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে আছেন খালেদাকে স্বাগত জানাতে আসা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার, মহিলা দলের সভাপতি নূরে ‍আরা সাফা, বিএনপির নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ।

তারা কারাফটকে দাঁড়িয়েই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে হাজার হাজার নেতাকর্মী স্বাগত-অভ্যর্থনা জানাতে এসেছেন। কিন্তু কাউকেই এয়ারপোর্টে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এতেই বোঝা যায় দেশে গণতন্ত্র নেই।

শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আপনারা দেখছেন এটা স্বাভাবিক আচরণ নয়। কোনো গণতান্ত্রিক সরকার এ ধরনের আচরণ করতে পারে না। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের একটি বৃহৎ দলের চেয়ারপারসন দীর্ঘ দিনের চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরছেন। সঙ্গত কারণেই তাকে স্বাগত-অভ্যর্থনা জানাতে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা-আগ্রহ আছে। কিন্তু কাউকে এখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের মতো প্রবীণ রাজনীতিকদেরও রাস্তায় বসিয়ে রাখা হয়েছে।

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, এই দিন দিন নয়, আরও দিন আছে।

আবদুল্লাহ আল নোমান অভিযোগ করেন, যেহেতু এ সরকারের কোনো জনভিত্তি নেই। সেহেতু এরা লোক দেখলেই ভয় পায়। সে কারণে মামলা-হামলার পরও হাজার হাজার নেতাকর্মী এখানে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভীতু এ সরকার কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না।

এ ঘটনাকে বেআইনি উল্লেখ করে নোমান বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে স্বাভাবিক চলাফেরার অধিকারটুকুও আমাদের দেওয়া হচ্ছে না। একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার বেআইনিভাবে আমাদের আটকে দিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

তবে, বিমানবন্দরের প্রধান ফটকে কড়া নিরাপত্তার বিষয়ে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) হিসেবে এখানে যে রকমের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, সেটাই আমরা দিচ্ছি। এর বাড়তি কিছুই হচ্ছে না।

এদিকে, বিমানবন্দরে ঢুকতে না পারা বিএনপির কয়েকশ’ নেতাকর্মীকে বলাকা অফিসের সম্মুখ থেকে এয়ারপোর্টের প্রধান ফটক পর্যন্ত এলাকায় রাস্তার দু’পাশে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত সফরে লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। দু’চোখ ও হাঁটুর চিকিৎসার জন্য তিনি এ সফরে যান। লন্ডনে অবস্থানকালে খালেদা জিয়া তার ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসার পাশের একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে অবস্থান করেন। দীর্ঘ এ সফরে তিনি স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান এবং একটি নাগরিক সভায় যোগ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৫/আপডেট ১৬৫৮ ঘণ্টা/আপডেট ১৭০৫ ঘণ্টা
এজেড/এইচএ

** দেশের উদ্দেশ্যে খালেদার লন্ডন ত্যাগ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।