ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নাইকো মামলায় আত্মসমর্পণ

খালেদার জামিন আবেদনের শুনানি চলছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
খালেদার জামিন আবেদনের শুনানি চলছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ-৯ আমিনুল ইসলামের আদালতে এ শুনানি চলছে।



হাইকোর্টের আদেশে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাওয়া খালেদা মামলাটির প্রধান আসামি।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) বেলা বারটা ২৫ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। জামিনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন তার প্রধান আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাকে সহায়তা করছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবদিন মেজবাহ, অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমসহ বিএনপির আইনজীবী নেতারা।

দুদকের পক্ষে শুনানি করছেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল।
 
বেলা সোয়া বারটার দিকে আদালতের এজলাসকক্ষে আসেন খালেদা। এর আগে সকাল সোয়া এগারটার দিকে রাজধানীর গুলশানের বাসভবন থেকে রওনা হন তিনি।

এদিকে খালেদার আত্মসমর্পণ উপলক্ষে পুরো আদালত চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৠাব, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচুর সংখ্যক সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। আছেন সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরাও। তারা তল্লাশি ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন না। খালেদা আসবেন বলে বাইরে আছেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী সিএসএফ সদস্যরাও।  

গত ১৮ জুন খালেদার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম বিচারিক আদালতে চলবে বলে রায় দেন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ। মামলাটি বাতিলে খালেদার রিট আবেদন ও এ সংক্রান্ত রুল খারিজ এবং বিচারিক কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে দুই মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে তার জামিনের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে নিম্ন আদালতকে বলেছেন উচ্চ আদালত।

নাইকো ছাড়াও গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা দু’টিও বিচারিক আদালতে চলবে বলে চূড়ান্ত রায় দিয়ে খালেদাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এসব দুর্নীতি মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিলের আবেদন জানিয়ে পৃথক পৃথক রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। এসব রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত ও রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। কয়েক বছর ধরে স্থগিত থাকার পর মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়ে রুল নিষ্পত্তির আবেদন জানায় দুদক। পরে পৃথক পৃথক শুনানি শেষে মামলা তিনটি সচলের রায় দেন হাইকোর্ট।
 
এসব মামলায় স্থায়ী জামিনে রয়েছেন খালেদা জিয়া।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলাটি করেন।

২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান।

অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্স্’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই নাইকো দুর্নীতির মামলার কার্যক্রম দুই মাসের জন্য স্থগিত ও রুল জারি করেন আদালত। পরে স্থগিতাদেশের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
এমআই/এএসআর

** আদালতে খালেদা
** আদালতের পথে খালেদা
** আদালত চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।