ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে জাতি হতাশ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
‘প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে জাতি হতাশ’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: সরকারের দুই বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ভাষণে জাতি হতাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
 
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।


 
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সাড়ে ১৭ ঘণ্টা পর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিএনপি।
 
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন, তা জাতিকে হতাশ করেছে। জাতির প্রত্যাশা ছিল, দেশে যে গভীর ‍রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনে একটি দিক-নির্দেশনা পাওয়া যাবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। কিন্তু দুর্ভাগ্য প্রধানমন্ত্রী রুটিন বক্তব্য রেখেছেন।
 
২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি একটি ‘অদ্ভুত’ ধরনের সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে গনতন্ত্র হত্যা করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত দুই বছর ছিল গণতন্ত্রকে নির্বাচিত করবার সময়। নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি দলীয়করণ করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ভূ-লুণ্ঠিত করবার সময়।
 
৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে প্রহসন আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ এবং দেশের সব রাজনৈতিক দলের স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচন বর্জনের প্রেক্ষিতে ১৫৩ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটা রাবারস্ট্যাম্প পার্লামেন্ট গঠন ছিল গণতন্ত্র হত্যার সর্বনিকৃষ্ট উদাহরণ।
 
পরবর্তীকালে উপজেলা নির্বাচন, ২০১৫ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং সব শেষে পৌরসভা নির্বাচনে এ কথা স্পষ্ট হয়েছে, এ সরকারের অধীনে এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় কোনো নির্বাচনই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না -বলেন ফখরুল।
 
তিনি বলেন, জনগণের কোনো ইচ্ছার প্রতিফলন এ নির্বাচনে হয়নি। ব্যাপক কারচুপি, সন্ত্রাস সৃষ্টি, জাল ভোট দেওয়া এবং রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে সরকার তার দলকে ক্ষমতায় রাখার ব্যবস্থা করেছে।
 
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবমুক্ত ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার কোনো দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
 
গত দুই বছর বিরোধী দল ও মতের মানুষের ওপর সীমাহীন নির্যাতন ও দমন পীড়নের নজিরবিহীন উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের হিসাব মতে, এই সময় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৪৪০ জন, গুম ও নিখোঁজ হয়েছেন ২৬৭ জন, গুরুতর আহত ও পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন ৩৩৭ জন, রাজনৈতিক মামলা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৮৩টি, আসামির সংখ্যা ৪ লাখ ১৬ হাজার ৪৪৭ জন। গ্রেপ্তার ও জেল হাজতে গেছেন ১৭ হাজার ৭শ’ ৮৭ জন।
 
তিনি বলেন, এ দুই বছর সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্রকে বিদায় করে তথাকথিত উন্নয়নের কথা বলে জনগণকে বোকা বানানো এবং নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘাস্থায়ী করা।
 
এটা করতে গিয়ে একে একে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। দেশের রাজনীতিতে সৃষ্টি করা হয়েছে গভীর সংকট। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে সেই সংকট উত্তরণের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই- অভিযোগ ফখরুলের।
 
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব মোহম্মদ শাহজাহান, সহ-প্রচার সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬/আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা
এজেড/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।