ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ফের পেছাতে পারে আ’লীগের সম্মেলন

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৬
ফের পেছাতে পারে আ’লীগের সম্মেলন

ঢাকা: আবারও পেছাতে পারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন। আগামী ২৮ মার্চ দলটির ২০তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

কিন্তু মার্চের শেষ সপ্তাহে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় ক্ষমতাসীনদেরও সম্মেলন নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।

গত ৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আগামী ২৮ মার্চ জাতীয় সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরমধ্যে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন থেকে মার্চের শেষ সপ্তাহে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কথাও জানানো হয়।

স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচনগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ব্যাপক জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততায় অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া, পৌরসভা নির্বাচনের পর এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দলীয়ভাবে এবং দলীয় প্রতীকে।

ব্যাপক পরিসরের এই নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন করা সম্ভব নাও হতে পারে বলে দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন। যদিও কেউ কেউ বলছেন, ইউপি নির্বাচন হতে পারে এপ্রিলে। সেটা হলে নির্ধারিত সময়ে আওয়ামী লীগের সম্মেলন করা সমস্যা হবে না। তবে এ ব্যাপারে এখনও দলের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মার্চের শেষ সপ্তাহে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার কথা বলা হয়। নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, মার্চের শেষ দিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যে ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মেয়াদ মার্চের মধ্যে শেষ হবে, কেবল সেগুলোতেই প্রথম ধাপে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

ইসির এ ঘোষণায় আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, নির্বাচন হলে সম্মেলন পিছিয়ে যেতে পারে। কারণ, সম্মেলনের প্রস্তুতির কাজও এখনও শুরু হয়নি। সম্মেলনের আগে দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রে সংশোধন, সংযোজন, বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন এবং কমিটিগুলোর কাজ শুরু করাসহ বেশ কিছু প্রস্তুতির বিষয় রয়েছে।

যদিও সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়ই দলের সাধারণ সম্পাদককে সম্মেলন প্রস্তুতি উপ-কমিটিগুলো গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আবার নেতারাও প্রস্তুতির জন্য হাতে বেশ সময় আছে, সেজন্য তাড়াহুড়োর প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, প্রস্তুতি এখনও শুরু হয়নি। প্রস্তুতি শুরু হবে মার্চের শেষ সপ্তাহে। ২৮ তারিখে সম্মেলন, ২৫ তারিখ থেকেই প্রস্তুতি শুরু হবে।

ইউপি নির্বাচনের মধ্যে সম্মেলন করা হবে কিনা জানতে চাইলে হলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হবে এপ্রিলে। এতে সম্মেলনের কোনো সমস্যা হবে না।

একই ধরনের কথা বলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে ২৮ মার্চ। এর কোনো প্রস্তুতি এখনও আমরা শুরু করিনি। সম্মেলনের এখনও অনেক দেরি।

ইউপি নির্বাচনের মধ্যে সম্মেলন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, দেখা যাক কী হয়। সময় এলে বোঝা যাবে।

গত ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ৩০ ডিসেম্বর সারাদেশে পৌরসভা নির্বাচনের কারণে তখন সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে প্রতি তিন বছর পরপর জাতীয় সম্মেলন করার বিধান রয়েছে। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর দলটির ১৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গত ডিসেম্বরে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেজন্য গত ৯ জানুয়ারি কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বর্তমান কমিটির মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হয়। সে অনুযায়ী আগামী জুন পর্যন্ত এই কমিটি বহাল থাকবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৬
এসকে/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।