ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ময়মনসিংহে ‘নৌকা প্রতীক’ নিয়ে আ’লীগ-বিএনপি মনোনয়নযুদ্ধ

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
ময়মনসিংহে ‘নৌকা প্রতীক’ নিয়ে আ’লীগ-বিএনপি মনোনয়নযুদ্ধ

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ নগরীর শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যাপক মফিজুন নূর খোকা জেলার গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তার রাজনৈতিক পরিচয় তিনি জেলা কৃষকলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস।



ওই ইউনিয়নে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক সরকারসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বেশ কয়েকজন। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় খোকাকে অল্প ভোটে পরাজিত করে বিএনপির সমর্থনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ফজলুল হক সরকার।
 
কিন্তু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় ভোল্ট পাল্টে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন ফজলুল হক সরকার। স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) মুজিবুর রহমান ফকির শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দিয়েছেন বলে গুঞ্জন চলছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সার্জেন্ট (অব.) নূরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ১০ লাখ টাকায় বিনিময়ে বিএনপি নেতা ফজলু নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বলে শুনেছি। স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এ সিদ্ধান্ত মানবে না।

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের অবস্থাও একই। ওই ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে মাঠে রয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো: মাহাবুব আলম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান মুর্শেদ। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হেলিম। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে এক সময় সম্পৃক্ত হেলিম এখন আওয়ামী লীগে ভিড়ে নৌকা প্রতীক নিতে চান।

স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দত্ত বলেন, অতীতে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও হেলিম চেয়ারম্যান এখন নৌকা প্রতীক পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন। এ খবরে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।
    
একই অবস্থা পার্শ্ববর্তী উচাখিলা ও রাজিবপুর ইউনিয়নসহ বেশিরভাগ ইউনিয়নে। তৃণমূলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এসব ইউনিয়নে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সংখ্যা প্রায় ৭ শতাধিক। তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা বেশি।

স্থানীয় ভোটাররা জানান, র্দীঘ সময় ধরে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোট। এ কারণে মাঠ পর্যায়ে বিএনপির অবস্থা বেশ নাজুক। ফলে নৌকাকে ‘বিজয়ের প্রতীক’ মনে করে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরা আওয়ামী লীগ নেতাদেরকে টেক্কা দিয়ে ‘নৌকা প্রতীকে’ নির্বাচন করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন।

এক্ষেত্রে টাকার লেনদেন প্রকাশ্যে চলছে বলে দাবি করেন স্থানীয় ভাংনামারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুস সাত্তার বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বিশাল দল। অন্য দল থেকে হায়ার করে কাউকে এনে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। তারপরও যদি এ ধরনের কোনো ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তার মনোনয়ন বাতিল করা হবে।

তিনি আরো বলেন, এ ধরনের অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে। তিনি অবশ্যই এসব বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।