খুলনা: খুলনার তেরখাদা উপজেলার সদর ও ছাগলাদহ ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র ছিনতাই, সন্ত্রাসী হামলা, হুমকি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং রিটার্নিং অফিসারের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরুতেই এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা প্রমাণ করে, এই সরকারের অধীনে ও বশংবদ নির্বাচনের কমিশনের মাধ্যমে এ দেশে কোনো অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।
বিএনপি নেতারা অবিলম্বে পক্ষপাতদুষ্ট পুলিশ ও জনপ্রশাসন এবং নির্বাচনী কর্মপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা, যারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বদলি করে নিরপেক্ষ ও সাহসী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়ে নির্বাচন আয়োজনের এবং তেরখাদা সদর ও ছাগলাদহ ইউনিয়ন নির্বাচনের পুনঃতফসিল দাবি করেন।
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনা জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতারা এ দাবি জানান।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তেরখাদা উপজেলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র ছিনতাই, ছিড়ে ফেলা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি চৌধুরী কওসার আলীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা, থানায় জিডি করতে গেলে না নিয়ে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুল বারী।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, তেরখাদা সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফকির অহিদুজ্জামানের ভাই তহিদুজ্জামান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নান্নু শেখের নেতৃত্বে বিএনপির মনোনীত সদরের প্রার্থী এস এম মহিবুল্লাহ ও ছাগলাদহ ইউনিয়নের মানজুর হাসান দারুর দলীয় প্রত্যয়নপত্র ও মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেলে সন্ত্রাসীরা।
বিএনপি সভাপতি কওসার চৌধুরীসহ নেতাকর্মীদের লাঞ্ছিত করে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য করে। একই দিন রাতে রূপসাউপজেলার টিএস বাহিরদিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর শেখ তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বিএনপির প্রার্থী বিকাশ মিত্রের ওপর হামলা চালায় এবং তাকে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে বিরত থাকার হুমকি দেয়।
বিএনপি নেতারা আরও অভিযোগ করেন, এসব হামলা, হুমকি ও সন্ত্রাসী তৎপরতার সাথে জড়িতরা সব ক্ষেত্রে ‘ভাইজান’ নামে পরিচিত স্থানীয় সংসদ সদস্যের নাম ব্যবহার করেন।
ইউপি নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে এই কথিত ভাইজানকে নির্বাচনের সময় নিষ্ক্রিয় করার দাবি জানান বিএনপি নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা ফখরুল আলম, আমির এজাজ খান, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, আরিফুজ্জামান অপু, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আব্দুর রশিদ, শফিকুল আলম তুহিন, আবু হোসেন বাবু, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, মেজবাউল আলম, জি এম কামরুজ্জামান টুকু, আশরাফুল আলম নান্নু, খন্দকার ফারুক হোসেন, জাফরী নেওয়াজ চন্দন, মঞ্জুর মোর্শেদ, মেহেদী হাসান মিলন, মুনিবুর রহমান নয়ন, এস্কন্দার মির্জা প্রমুখ।
এদিকে তেরখাদার দুই ইউনিয়নে পুনঃতফসিলের দাবিতে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন সহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মরাকলিপি দেবে বিএনপি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
এমআরএম/এমজেএফ