ঢাকা: দলকে শক্তিশালী করার স্বার্থে জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টি ও প্রেসিডিয়াম সদস্যরা বিরোধী দলীয় নেতা সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ এমপিকে দলের ১নং কো-চেয়ারম্যান করার দাবি জানিয়েছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভালো ফল করতে হলে অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে-এমনটাও দাবি এমপিদের।
বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে বিরোধী দলীয় নেতার বাসায় অনির্ধারিত সভায় এমপিরা আরও বলেন, গত ২০ জানুয়ারি দলের সংসদীয় কমিটির সভায় বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এমপিকে ১নং কো-চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেনপার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আহবান জানান তারা।
সূত্র জানায়, এমপিরা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিতে রওশনকে অনুরোধ জানান। এরপর রাত সোয়া ৯টায় বিরোধী দলীয় নেতার প্যাডে এ দাবির কথা জানানো হয়।
বিরোধী দলীয় নেতার কার্যালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন হাসান স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কোনো আলোচনা ছাড়াই গত ১৭ জানুয়ারি রংপুর জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তার ছোট ভাই জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেন, যা সম্পূর্ণ পার্টির গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। এতে পার্টির প্রেসিডিয়াম, সংসদ সদস্য এবং হাজার হাজার কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
গত ১৮ জানুয়ারি বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ এমপির বাসভবনে প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলের কারও সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই পার্টির চেয়ারম্যান তার ছোট ভাই জি এম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ার সমালোচনা করা হয়। সভায় বলা হয়, যখন গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সকল দল তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে চলেছে, সেই সময় দলের কারো সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই পার্টির চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা গণতন্ত্রের স্বার্থের পরিপন্থি।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, পরবর্তীতে ২০ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির সংসদীয় কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সকল সংসদ সদস্য পার্টির চেয়ারম্যানকে তার সিদ্ধান্ত বদলানোর জন্য অনুরোধ জানালে তিনি বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এমপিকে ১নং কো-চেয়ারম্যান বানাবেন বলে সভায় কথা দেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয় নাই।
অবিলম্বে তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সংসদীয় কমিটি মনে করে, এ মুহূর্তে দলকে এক, অভিন্ন ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এর বিকল্প নেই।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সংসদ সদস্যরা তৃণমূল পর্যায়ে তাদের প্রতিনিধি ঠিক করার জন্য ইউনিয়ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান। অথচ সংসদীয় কমিটি লক্ষ্য করছে, এমপিদের পাশ কাটিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের নমিনেশন দেওয়া হচ্ছে এবং জেলা সম্মেলন করা হচ্ছে।
জাপার একটি সূত্র জানায়, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ দলীয় এমপিরা রওশনের সঙ্গে দেখা করার পর এ বিবৃতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৬
এএসআর