ঢাকা: বিএনপির আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলে দলটির প্রয়াত মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমানের কন্যা বর্তমান কমিটির নির্বাহী সদস্য শামা ওবায়েদ ‘বড়’ পদ পেতে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
কম্পিউটার বিজ্ঞানে ঊচ্চতর ডিগ্রিধারী, তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, পরিশ্রমী, মেধাবী, সক্রিয় তরুণ এই নেতাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা ও জাতীয় কাউন্সিল আয়োজনে সম্পৃক্ত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এ আভাস পাওয়া গেছে।
সূত্রমতে, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব’র বিষয়টি মাথায় রেখে বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে শিক্ষিত, যোগ্য ও সক্রিয় তরুণদের আনতে চান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সাম্প্রতি বিভিন্ন সভা, সমাবেশ, সেমিনার ও ঘরোয়া অনুষ্ঠানে নিজের এই অভিপ্রায় বার বার ব্যক্ত করেছেন তিনি।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়বাদী মহিলা দল আয়োজিত অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া বলেন, শিক্ষিত, যোগ্য, সৎ, পরিশ্রমী ও দলের প্রতি অনুগত তরুণদের বিএনপির নেতৃত্বে আনা হবে। এক্ষেত্রে নারীরা তাদের যোগ্য সম্মান পাবে দলে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক দশক ধরে বিএনপির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসা শামা ওবায়েদকে নিয়ে আলাদা করে ভাবছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
‘জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’ ‘ইয়ুথ মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি’সহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ শামা ওবায়েদকে এবারের কাউন্সিলে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতে চান বিএনপি প্রধান।
এ ক্ষেত্রে দলের ৭ সদস্য বিশিষ্ট যুগ্ম মহাসচিব পদ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১১ সদস্য বিশিষ্ট করে সেখানে শামা ওবায়েদকে বসানোর সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
আরেকটি সূত্রমতে, বিএনপির বিদেশনীতির সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত তরুণ প্রজন্মের ‘আইকন’ শামা ওবায়েদকে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ ভোট গ্রহণে সরকারি সিদ্ধান্ত’র বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সভা-সেমিনার, রাজনৈতিক মঞ্চ ও টিভি টক শো-তে খেস্তি-খেউর করলেও ইভিএম’র খারাপ দিকগুলো তথ্য প্রমাণসহ তুলে ধরার কাজে তারা ছিলেন পিছিয়ে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে পোস্টগ্রাউজুয়েট শামা ওবায়েদ ইভিএম নিয়ে অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান, সংগৃহিত তথ্য প্রমাণ, বিভিন্ন দেশে ইভিএম’র অপব্যবহার ও এই মুহূর্তে বাংলাদেশে এ যন্ত্রের ব্যবহারের অনুপোযোগিতাগুলো তত্ত্ব-উপাত্তের মাধ্যমে তুলে ধরতে গত তিন বছরে আয়োজন করেন অন্তত কয়েক ডজন প্রোগ্রাম।
গাঁটের পয়সা খরচ করে আয়োজিত ওইসব প্রোগ্রামে দেশি-বিদেশি এক্সপার্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজনীতিবিদ ও টেকনিশিয়ানদের হাজির করে শামা ওবায়েদ সংশ্লিষ্টদের বোঝাতে সক্ষম হন, বাংলাদেশ এই মুহূর্তে ইভিএম-এ ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুত নয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, তথ্য প্রযুক্তিতে শামা ওবায়েদের এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে তাকে দলের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন খালেদা জিয়া।
মোট কথা, যুগ্ম মহাসচিব, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অথবা তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক- এই তিনটি পদের যে কোনো একটি পদ পেতে পারেন শামা ওবায়েদ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শামা ওবায়েদ বাংলানিউজকে বলেন, কোনো পদের জন্য দৌড়া-দৌড়ি বা দেন দরবার আমি করছি না। আমার কোনো ডিমান্ডও নেই। ম্যাডাম যেখানে দায়িত্ব দেবেন সেখানেই কাজ করব। যেমনটি এখন করে যাচ্ছি।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান বাংলানিউজকে বলেন, সত্য বলতে কি- কাকে কোন পদ দেওয়া হবে সেটি ম্যাডাম ছাড়া কেউ জানেন না। আমাদের গঠনতন্ত্রেই বলে দেওয়া আছে, দলের সব পদে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা নিয়োগের এখতিয়ার চেয়ারম্যানের (চেয়ারপারসন) হাতে ন্যাস্ত থাকবে। শুধু এটুকু বলা যায়, যোগ্য লোককেই দায়িত্ব দেবেন ম্যাডাম।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৬
এজেড/জেডএম