ঢাকা: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, প্রথমবারের মতো ইউপি নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে। এতে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে গিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অতিমাত্রায় খড়্গহস্ত হয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিকেলে ইসি সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, দলীয়ভাবে নির্বাচন হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে মানুষের মধ্যে আগ্রহ, সাড়া ও উদ্দীপনা আছে। পাশাপাশি অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এক সময়ে যারা নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা করেছে, তারাও এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তাদের কিছু নেতিবাচক কর্মকাণ্ড রয়েছে। ইসি’র কাছে আমাদের সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ এবং অভিযোগ তুলে ধরেছি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে তারা সব ধরনের আইন প্রয়োগ করতে পারেন। কিন্তু নিরপেক্ষ থাকার দোহাই দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের উপর আইনের খড়্গ চাপালে তা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সেই বিষয়টি সিইসিকে জানিয়েছি। আমরা আশা করি, আমাদের অভিযোগগুলো বিবেচনা করবেন, যাতে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়।
তিনি বলেন, ফেনীর ফুলগাজীতে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। সেখানে দলটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এর বহিঃপ্রকাশ হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাঁধা দেয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু অভিযোগ অন্যভাবে ঘুরিয়ে সেখানে যে নির্বাচন কর্মকর্তা রয়েছেন, যিনি ২০০৫ সালে নিয়োগকৃত। তিনি সম্পূর্ণভাবে একটি রাজনৈতিক দলের আদর্শে আদর্শিত কর্মী। তার সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করেছেন। ওই চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরাখাস্ত করেছে কমিশন। আমাদের অভিযোগ হচ্ছে, এ ঘটনার সঠিক তদন্ত না করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির কথার ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এতে প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে গিয়ে সরকারি দলের ওপর অতিমাত্রায় খড়্গহস্ত হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জেনেছি, একজন সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু করার স্বার্থে বিদ্যমান যে আইন রয়েছে, তার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করার জন্য বলেছি। সরকারি দল বা অন্য দলের সংসদ সদস্য হোক, তা ইসি’র কাছে বিবেচ্য হতে পারে না। আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবো। আমরা এমপিদের সতর্ক করে দেবো, যাতে কোনোভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে না যান। যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন, তবে তদন্ত সাপেক্ষে দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি পাঁচ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাবস্থায় অন্যায়, সন্ত্রাস, দুর্নীতি করার কারণে ইতোমধ্যে জনগণের কাছে ধিকৃত হয়েছে। বিরোধী দলে থাকাবস্থায় জনগণের বিরুদ্ধে বারবার অবস্থান করেছে, সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করেছে। তাই তারা জনরোষের আক্রোশের শিকার হতে চায় না বলে প্রার্থী দেয়নি। এছাড়া অনেক জায়গায় প্রার্থীই খুঁজে পায়নি বিএনপি। এজন্যই অনেক জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দিপু মনি ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৬
ইইউডি/এএসআর