ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আন্ডারগ্রাউন্ডে জামায়াত, জুনিয়র গ্রুপ সক্রিয়

মান্নান মারুফ ও শরীফ সুমন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৬
আন্ডারগ্রাউন্ডে জামায়াত, জুনিয়র গ্রুপ সক্রিয়

রাজশাহী থেকে ফিরে: রাজশাহীতে বোমা হামলা চালিয়ে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যার ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন জামায়াতের শীর্ষ নেতারা। ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর বোমা হামলায় পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ রায় মারা যাওয়ার পরপরই স্থানীয় নেতারা গা-ঢাকা দেন।

নিজেদের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনও বন্ধ রেখেছেন তারা।

বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে কোণঠাসা হয়ে পড়া জামায়াত-শিবির ২০১২ সালের শেষ দিকে এসে সারাদেশে পুলিশকে লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালায়। ওই বছরের ৭ নভেম্বর পুলিশের রাইফেল কেড়ে নিয়ে হামলা করে জামায়াত-শিবির। সেই সময়ে রাজশাহীতে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তারা এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।

আত্মগোপনে থাকা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন, রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা আতাউর রহমান, সেক্রেটারি ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সহকারী সেক্রেটারি এমাজ উদ্দিন মন্ডলসহ আরও অনেকে।

এছাড়া রাজশাহী মহানগর শিবিরের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলম ইমন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া, তুহিন, আজিজুর রহমান, কাফি, রাজু, হুমায়ন, লিটন, বিপ্লব, জনি, মিলন, তারেক, নোমান, জোহা, ডা. আলমগীরও আত্মগোপনে রয়েছেন।

পুলিশ ও র্যাব এসব নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছে এখনও।

এদিকে, শিবিরের সিনিয়র নেতারা যখন আত্মগোপনে ঠিক তখন শিবিরের জুনিয়র গ্রুপ শক্তিশালী। নগরীর বিভিন্ন এলাকার জুনিয়র গ্রুপের ৪০ জনের নাম এখন গোয়েন্দাদের হাতে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, এই ৪০ জনই উপ-গ্রুপে বিভক্ত হয়ে একেক জন একেক ইউনিটের দায়িত্ব পালন করছেন।

পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায় সক্রিয় জুনিয়র শিবিরকর্মীরা হলেন নগরীর চাঁদ, রাকিব, মহিদুল, মানিক, জাহাঙ্গীর  খুশি, সাজ্জাদ, কালাম, জামাল, রবিউল, মান্না, আইনাল, নবাব, মাসুম, মারুফ, নয়ন, শেখ, জনি, আফজাল, সজল, রাসেল, শামিম, জুলমত, তোতা, সুমন, শশি, আশরাফুল, সোহেল, বাবলু,  সাত্তার, রাব্বানি, নুহু, রিপন, মিজান, এনামুল, হামিম, সোনা, নাহিদ, মানিক ও মিলন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, এই গ্রুপে সর্বোচ্চ অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্ররা রয়েছেন। এছাড়া এদের বেশিরভাগই নগরীর বিভিন্ন কলেজের এইচএসসি শিক্ষার্থী।

এসব কর্মীরা খুবই প্রশিক্ষিত উল্লেখ করে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, নগরীর অন্তত ১৫টি স্পটে তাদের নেতৃত্বে শিবিরকর্মীরা বিগত সময়ে নাশকতা চালিয়েছে রাজশাহী জুড়ে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এই জুনিয়র গ্রুপ কোথায় কীভাবে অবস্থান করছে সে বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ গ্রুপের কাছে বোমা এবং অস্ত্র আছে বলেও ধারণা করছেন পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. শামসুদ্দিন বলেন, জামায়াত-শিবির কর্মীরা আত্মগোপনে চলে গেলও পুলিশ তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর নজর রাখছে। তবে এই অঞ্চলে নাশকতা চালানোর মতো ক্ষমতা তাদের আর নেই। এরপরও পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

এসব ব্যাপারে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও জামায়াতের কাউকে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৬
এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।