ঢাকা: রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রতিরোধে ব্যর্থতার অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
সোমবার (মার্চ ১৪) বেলা এগারোটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি’র পক্ষ থেকে অবিলম্বে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার ও এর সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি। একই সাথে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এবং গভর্নর অাতিউর রহমানের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি করছি। ’
তিনি বলেন, ‘জনগণের টাকা হ্যাকিংয়ের নামে চুরি হচ্ছে, পাচার হয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ৮০০ কোটি টাকা হ্যাক করার কথা তিনি কিছু জানেন না। যে সরকার গৃহস্থের বদলে চোরকে নিরাপদ রাখতে বেশি ব্যস্ত থাকে তারা তো কিছুই জানবে না। এ অবস্থায় অর্থ পাচারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। এখন সেই প্রবণতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভোটারবিহীন কলঙ্কজনক নির্বাচনের সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রীর কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যে পুরো জাতি স্তম্ভিত। রিজার্ভের অর্থ কারো পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ নয়। আমাদের রক্ত পানি করা প্রবাসী শ্রমিকদের কষ্টার্জিত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভ হিসেবে সংরক্ষিত হয়। এ ঘটনাটি ঘটার প্রায় এক মাস পর কেন এটি প্রকাশ হলো ? এতে সুস্পষ্টভাবেই বোঝা যায়-ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার অপপ্রয়াস চলছিল।
রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্রহীন দেশের একটি ভোটারবিহীন স্বৈরাচারী সরকারের বৈশিষ্ট্য-সর্বক্ষেত্রে অপশাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলার অভাব, যার পরিণতি হচ্ছে বর্তমানের আর্থিক সেক্টরে বিরামহীন হরিলুট। এতে ক্ষমতাসীন মহলের বড় বড় রুই কাতলারা যে জড়িত তা সুস্পষ্ট। জাতি জানতে চায়-এই দুর্নীতির শেষ কোথায় ? যেহেতু বর্তমান সরকার পুরানো বাকশালের প্রেতাত্মা তাই বাংলাদেশ ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র দিকে আবারো এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে অঘোষিত আর্থিক অবরোধের কারণে দেশের রপ্তানি খাত ধ্বংস হতে বসেছে। দেশে বিনিয়োগ প্রায় শূন্যের কোঠায়, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে পুরো জাতি এখন নিরাপত্তাহীন। বিদেশিরাও এখন আমাদের দেশে নিরাপদ নয়, বিনিয়োগ থেকে শুরু করে তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনের উপরও রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে। দেশে এখন আবারো সেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। জাতি এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চায়। ’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৬
আরআই/