ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ‘সরকারের জ্ঞাতসারেই ঘটেছে এবং এতে সরকারের মদদও আছে’ বলে দাবি করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
চুরির ঘটনার দায় সরকার এড়াতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগের মাধ্যমে প্রমাণ হয় যে, এই অর্থ চুরির সাথে শুধু তিনিই দায়ী নন, এর সাথে সরকারের উচ্চ মহলও জড়িত।
রিজার্ভ চুরির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।
মঙ্গলবার (মার্চ ১৫) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকে বাংলাদেশের সঞ্চিত ১০ কোটি ডলার চীনা হ্যাকাররা হাতিয়ে নেয় বলে সম্প্রতি ফিলিপিন্সের একটি সংবাদপত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ব্যাংক চ্যানেলে ফিলিপিন্সের ওই অর্থ নিয়ে সেখান থেকে ক্যাসিনোসহ একাধিক হাত ঘুরে অন্যদেশে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলাদেশের এই অর্থ। লোপাট অর্থের একটি অংশ উদ্ধারের কথা সোমবারই জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কী পরিমাণ অর্থ সরানো হয়েছিল এবং তার কতটুকু উদ্ধার হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন,‘রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা ও অনেক নাটকীয়তার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলছেন, আতিউর সততার বিরল দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। অর্থমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেছেন সব ঠিক হয়ে গেছে। মূলত ইতিহাসের জঘন্যতম এ ঘটনা নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে নাটক ও তামাশা করছে। গভর্নরের পদত্যাগ প্রমাণ করে এর পিছনে রাঘব বোয়ালরা জড়িত।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ‘অবৈধ ভোটারবিহীন সরকার পুরো আর্থিক খাতকে তছনছ করে দিয়েছে। দেশের সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুটপাটের ফলে দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। ’
জবাবদিহিতা নেই বলেই সরকার তার খেয়ালখুশিমতো সবকিছু করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গণমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন,‘বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভের যে ৮’শ কোটি টাকার কথা বলা হচ্ছে তাও প্রকৃত সংখ্যা নয় বলে জানা গেছে।
দেশ এখন সঙ্কটের আবর্তে পড়েছে, দাবি করে রিজভী বলেন,‘বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি এখন শূন্যের কোঠায়। সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ভয়ঙ্কর বেকারত্ব দেখা দিয়েছে। দেশে সামাজিক নৈরাজ্য এক চরম রূপ ধারণ করেছে। ব্যবসা বাণিজ্য, মিল-কল কারখানা একের পর এক বন্ধ হয়ে পড়ছে। বিনিয়োগ সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। ’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৬
আরআই