ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ভাঙা জাসদ জুড়তে সমঝোতার উদ্যোগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৬
ভাঙা জাসদ জুড়তে সমঝোতার উদ্যোগ

ঢাকা : সদ্য বিভক্ত জাসদের দুই অংশের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়া হলেও এখনও কোনো সমাধান আসেনি। বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়া নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন।



তবে সূত্র জানায়, জাসদের দুই অংশ সমঝোতা চাইলেও তারা নিজ নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার (মার্চ ১৫) সকালে জাসদের একাংশের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে সমঝোতায় উদ্যোগী নেতারা বৈঠক করেছেন। এর পর সন্ধ্যায় ওই নেতারা বসেছেন শরিফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন অংশের সঙ্গে। এর আগেও তারা এই অংশের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে দফায় দফায় বৈঠক হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এখনও কোনো সমঝোতা হয়নি।   

ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি ও জাসদের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মনিরুদ্দিন আহমেদ দুই অংশের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেন। তার সঙ্গে এই সমঝোতা প্রক্রিয়ায় রয়েছেন অধ্যাপক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন ও আমেনা সুলতানা বকুল।

এদিকে জাসদের আরেকটি সূত্র জানায়, দলের দুই অংশকে সমঝোতায় আনার জন্য মধ্যপন্থি একটি অংশ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা কারছেন। তারা মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ নিলে একটি সমাধান বেরিয়ে আসবে এবং জাসদের ঐক্য রক্ষা হবে। বিষয়টি নিয়ে মধ্যপন্থি ওই অংশটি আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, জাসদের বিগত কমিটির কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দিন খান বাদল এমপিকে মেনে নেবে না হাসানুল হক ইনু ও জাসদের এই অংশের নেতারা। দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে আলাদা কমিটি ঘোষণার পর হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছেন মঈনুদ্দিন খান বাদল। তাছাড়া ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। এই প্রেক্ষাপটে হাসানুল হক ইনু তাকে (বাদলকে) মেনে নেবেন না বলে ওই সূত্রটি আরও জানায়।

এদিকে জাসদ থেকে বেরিয়ে গিয়ে দলের একাংশ যে কমিটি ঘোষণা করেছে তাতে শরিফ নুরুল আম্বিয়াকে সভাপতি, মঈনুদ্দিন খান বাদলকে কার্যকরী সভাপতি ও নাজমুল হক প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করা হলেও এই অংশের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন মঈনুদ্দিন খান বাদল। ওই অংশের নেতারা নতুন কাউন্সিল এবং নতুন করে কমিটি নির্বাচন দাবি করছেন। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদে। আর নতুন কাউন্সিলের পাশাপাশি বাদলকেও দলে গুরুত্বপূর্ণ পদে না নিলে তারা কোনো সমঝোতায় আসবে না বলে জানা গেছে।

আবার ইনুর অংশটি সমঝোতায় আসলেও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তারকে রেখেই সমঝোতায় আসার শর্তে অনড় রয়েছেন।  

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মঈনুদ্দিন খান বাদল বাংলানিউজকে বলেন, ওই কাউন্সিল ছিলো চক্রান্তমূলক। ওই কাউন্সিল বাতিল করতে হবে। ওই কাউন্সিলের ফলাফল রেখে কোনো সমঝোতা হতে পারে না।

এদিকে জাসদের নতুন অংশের নেতারা জানান, তাদের সঙ্গে দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীই রয়েছে। তাদের দাবি, দলের স্থায়ী কমিটির ১৪ সদস্যের মধ্যে ৮ জন রয়েছেন তাদের সঙ্গে। দলের ৪০টি জেলা কমিটি তাদের সঙ্গে রয়েছে। এছাড়া দলের ৬জন এমপির মধ্যে তিন জন রয়েছেন নতুন জাসদের সঙ্গে। সংরক্ষিত মহিলা আসনের একমাত্র সদস্য লুৎফা তাহের উভয় পক্ষকে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে সমঝোতা না হলে তিনি নতুন জাসদের অংশে যাবেন বলে জানা গেছে।

সমঝোতায় আসবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, শিরিন আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক রেখে কোনো সমঝোতা হবে না। নতুন করে কাউন্সিল করতে হবে। মঙ্গলবারের মধ্যে আমরা যদি কোনো উত্তর না পাই তবে এই সপ্তাহের মধ্যেই আমরা নতুন কমিটি দেয়ার প্রস্তুতি নেবো। বুধবার নতুন কমিটি ঘোষণা দেয়ার কথা ছিলো কিন্তু আমরা সারা দেশের জেলাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমাদের পুরোনো নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি।

নাজমুল হক প্রধান বলেন, ৪০টি জেলা কমিটি আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের সঙ্গে ৪ জন এমপি রয়েছেন। ওই কাউন্সিল বাতিল করলে হয়তো একটা সমঝোতা হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০০১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৬
এসকে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।