মংলা (বাগেরহাট) থেকে: বাগেরহাটের মংলা থানার ৫টি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকা। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তারা।
নির্বাচনী মাঠে আছেন ধানের শীষের প্রার্থীরাও। গণসংযোগে প্রতিনিয়তই তারা ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও গলায় তেমন জোর নেই! জানালেন, হুমকি-ধমকির কারণে বেশ ভয়ে ভয়ে রয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বাগেরহাটের মংলা থানার ৫টি ইউনিয়ন ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্তে কথা বলে এমনটাই জানা গেল।
সরেজমিনে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা দিনরাত নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন। ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে নানা প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস দিচ্ছেন তারা। জয়ের বিষয়েও বেশ আশাবাদী ক্ষমতাসী দলের প্রার্থীরা।
তবে বিএনপি প্রার্থীরা বলছেন, এখনও পর্যন্ত তেমন কোনো সহিংসতা হয়নি। তবে বেশ আতঙ্কে রয়েছেন তারা। নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই ভোটগ্রহণের দিন কী হয় তা নিয়ে আতঙ্কে আছি।
সুন্দরবন ইউনিয়নের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মৃধা বাংলানিউজকে বলেন, সরাসরি ভয় দেখানো না হলেও আমার বিভিন্ন পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। কেউ পোস্টার লাগালে কে সেই পোস্টার লাগালো তার খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
‘তাদের নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আর ভোট কেন্দ্রে গেলেও প্রকাশ্যে টেবিলের উপরই প্রতীকে সিল মারতে হবে-বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়াও দেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচনে ধানের শীষের কর্মী-সমর্থকরা এজেন্ট হতেও ভয় পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ইউপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনে হেরে গেলে আমার কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘর কিংবা চিংড়ির ঘেরে হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
‘এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দরখাস্ত দিয়েছি। ’
একই অভিযোগ করলেন উপজেলার চিলা ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থী শাহাবুদ্দিন ফকির, মিঠাখালী ইউনিয়নের সুজন মোল্লা ও বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুভাষ চন্দ্র রায়ও।
তবে হুমকি-ধমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কবির উদ্দিন শেখ।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নজরুল মৃধার লোকজনই আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। ‘তিনি (নজরুল) তার এজেন্ট নিয়োগ করবেন, তাতে কে বাধা দেবে। আসলে তার পক্ষে এজেন্ট না পেয়েই দায়ভার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। ’
চিলা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গাজী আকবর হোসেন নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। বললেন, গত ভোটে দলের সমর্থন না পেয়েও মাত্র ৮১ ভোটে হেরেছিলাম। এবার দলের সমর্থন নিয়ে নৌকা মার্কায় নির্বাচন করছি। আশা করছি জয়ী হবো।
আওয়ামী লীগ মনোনীত বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের নিখিল চন্দ্র রায় ও চাঁদপাই ইউনিয়নের তরিকুল ইসলাম মোল্যা জানান, গতবারও তারা নিজ নিজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
‘সে সময় উন্নয়নমূলক অনেক কাজ করেছি, দল এবার নমিনেশন দিয়েছে। তাই জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। ’ সার্বিক নির্বাচন বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ জাকারিয়া বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। এখনও পর্যন্ত কোনো প্রার্থী আচরণ বিধি লঙ্ঘন বা অন্য বিষয়ে অভিযোগ করেননি। শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে মংলার সোনাইলতলা ইউনিয়ন পরিষদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় নারজিনা বেগম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
থানার চাঁদপাই ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী আসনসহ ৫৮ জন, বুড়িরডাঙ্গায় ৫১ জন, সোনাইলতলায় ৩৫, মিঠাখালীতে ৬৩, সুন্দরবনে ৪৮ ও চিলায় ৫৯ প্রার্থী সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচন করছেন।
এদিকে এলাকার ভোটাররা নৌকায় ভোট দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বললেও ধানের শীষের কর্মী-সমর্থকরা সেভাবে কিছু বলতে চাননি।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৬
এমআই/এমএ
** ডিজিটাল পৌরসভার মডেল মংলা পোর্ট পৌরসভা