ঢাকা: সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে নিশ্চিহ্ন করতে মতপার্থক্যের ঊর্ধ্বে থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
শনিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (আইসিসি) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি আহ্বান জানান।
‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় করণীয়’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক উপ-পরিষদ।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক বা অন্য কারণে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। এখানে কাউকে ছোট করা, কাউকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল; এসব থাকলে তা আসলে সন্ত্রাসবাদ দমনে অন্তরায় হবে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ।
বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে শতভাগ জিরো টলারেন্স অবস্থানে আছেন বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেকেই আওয়ামী লীগকে ডিফেন্ড করে, সরকারকে ডিফেন্ড করে, মনে হয় যেন এক ঢিলে দুই শত্রু মারার চেষ্টা করেন। এখানে প্রধানমন্ত্রী বা বর্তমান সরকার আন্তরিক নয়, এটা ঠিক না।
‘আজকে তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নেতৃত্বের জন্যই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আওয়ামী লীগের হাতে এবং শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন। সরকারের অধীনে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অভিযান চালানো হচ্ছে। ’
মধ্যপ্রাচ্য সহিংসতার প্রসঙ্গ তুলে ধরার পাশাপাশি সৌদি আরবের সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাস শুধু আমাদের দেশে না। সন্ত্রাস মধ্যপ্রাচ্যের প্রত্যেকটা দেশে আছে। মধ্যপ্রাচ্যে এ অবস্থা কেন? এটা এক ধরনের সাম্প্রদায়িকতা। এর মূল উদ্যোক্তা সৌদি আরব। ইরাক এবং সিরিয়ায় এ অবস্থা কেন? এর উদ্যোক্তাও সৌদি আরব।
‘সৌদি আরব যদি সুন্নিদের না পৃষ্ঠপোষকতা করতো, তাহলে কিন্তু ইরাকে যুদ্ধ হয় না। সিরিয়াতে এ অবস্থা হয় না। এগুলি তাদের সংকীর্ণ ধর্মীয়গোষ্ঠীর কারণে সমগ্র বিশ্ব আজকে আতঙ্কে। কেউ আজকে নিরাপদ নাই। ’
মধ্যপ্রাচ্যের সহিংসতার কারণে বাংলাদেশও নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সব অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
সেমিনারে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, সারা দেশ থেকে যারা ওখানে (বিএনপির কাউন্সিলে) সমবেত হয়েছেন, তারা যেন নিজেদের একটা প্রশ্ন করেন, তা হলো- কী পেয়েছেন? আর কী পাবেন এই নেতৃত্বের কাছ থেকে।
‘বিকৃত-উন্মাদ রাজনীতির ধারক একজন দেশে বসে, অন্যজন বিদেশে বসে। এদের সম্মিলিত শক্তি দ্বারা বাংলার মানুষের কী হবে? তারা দেশকে কী দিবেন?,’ বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বিএনপির উদ্দেশ্যে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) কাছে একটি ম্যাসেজ দিতে হবে, এতোদিন যা তারা করেছে তা থেকে যেন সরে দাঁড়ায়। পাকিস্তানিদের সঙ্গে থেকে কোনো লাভ হবে না। তা বাদ দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, ১৯ মার্চ, ২০১৬
এমইউএম/এমএ