ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি ও গর্ভনর আতিউর রহমানকে নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
রোববার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় গণভবনে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়।
বৈঠক সূত্রে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অর্থমন্ত্রী প্রসঙ্গে কথা তোলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা ব্যাংকে দুই লাখ টাকার চেক দিলে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করে, কনফার্ম হয়। আমেরিকার ফেডারেল ব্যাংক কনফার্ম না করে এত টাকা দিলো কিভাবে। অর্থমন্ত্রী ফেডারেল ব্যাংকের বিষয়ে কোনো কথা না বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে দোষারোপ করলেন, তার বিরুদ্ধে কথা বললেন।
হাছান মাহমুদের পর দলটির সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক একই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে সূত্র জানায়।
অর্থমন্ত্রী একটি দৈনিকে দেয়া সাক্ষাতকারে আতিউর রহমানের সমালোচনা করে বলেছেন, আমি খুব অবাক হয়েছি। আতিউর রহমান সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তিনি একটুও লজ্জিত হননি।
তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি ইনিয়ে-বিনিয়ে অনেক কথা বলেছেন। দু’জন ডেপুটি গভর্নরের চাকরি গেছে তার কারণে। বোঝাতে চাইলেন যে তিনি একা দায়ী নন। দু’জনের বাইরে আরও কয়েকজনের চাকরি খাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তা আর হয়নি, হবেও না।
অর্থমন্ত্রী আতিউর রহমান প্রসঙ্গে আরো বলেন, তিনি সংকটটির গভীরতাই বুঝতে পারেননি। আমার মনে হয়, তিনি চিন্তাই করতে পারেননি যে এটা একটা বড় ঘটনা। খবর পেয়েও তিনি দেশের বাইরে বাইরে ঘুরেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আতিউর রহমানের অবদান প্রায় শূন্য (অলমোস্ট জিরো) মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী তার সাক্ষাতকারে বলেছেন, তিনি খালি পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন, আর লোকজনকে অনুরোধ করেছেন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য তাকে সুযোগ দিতে ও দাওয়াত দিতে। এখন বেরোচ্ছে এগুলো।
অর্থমন্ত্রী এসব ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন সাক্ষাতকারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানকে নিয়ে কথা বলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন ও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানেরও সমালোচনা করা হয় বৈঠকে।
বৈঠক সূত্রে আরো জানা যায়, এ সময় প্রধানমন্ত্রী কারো নাম উল্লেখ না করে বলেন, দলের সিদ্ধান্ত না জেনে আগ বাড়িয়ে কারো কোনো কথা বলা ঠিক না।
এছাড়াও বৈঠকে দলের বিভিন্ন বিষয়েও আলাপ হয়।
মৌলভীবাজার জেলা সম্মেলন দ্রুত সম্পন্ন নির্দেশ দেওয়া হয় বৈঠকে। এছাড়া ২২ মার্চ ফরিদপুর জেলা কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু জন্ম শতবার্ষিকী পালনে আগে থেকে কমিটি গঠন ও যথাযথ ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
এছাড়া ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী যথাযথভাবে পালনেরও সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৬
এসকে/এমইউএম/এসএইচ