কক্সবাজার: ২২ মার্চের ইউপি নির্বাচনে টেকনাফের ৪ ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার জয়ের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি।
৪টি ইউপিতেই এমপি বদির ঘনিষ্ঠ অনুসারীরা বিদ্রোহী প্রার্থীর খোলসে নির্বাচনে লড়ছেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে টেকনাফ সদর ইউপি নির্বাচনে লড়ছেন এমপি বদির ঘনিষ্ঠ অনুসারী উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের ছেলে শাহাজাহান। সাবরাংয়ে রয়েছেন এমপি বদির অনুসারী উপজেলা যুবলীগ বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন, বাহারছড়া ইউপিতে সাবেক বিএনপি নেতা ও এমপি বদির হাত ধরে আ’লীগে যোগদানকারী হাবিবুল্লাহ এবং সেন্টমার্টিনে রয়েছেন এমপি বদির আশীর্বাদপুষ্ট নুর আহমদ।
এ বিষয়ে সাবরাং ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী সোনা আলী বাংলানিউজকে জানান, এমপি বদির আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ অনুসারীরা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।
সেন্টমার্টিন ইউপি আ’লীগ প্রার্থী মুজিবুর রহমান জানান, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত এমপি বদির সঙ্গে কোন যোগযোগ হয়নি। কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাইনি। অথচ এমপি বদির অনুসারীরা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থী বিভিন্ন জনসভায় নিজেকে এমপি বদির প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ জয় বাংলানিউজকে জানান, এমপি বদি দলীয় নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন তো করেনই না বরং উল্টো তাদের বিরুদ্ধে নামেন। এমনকি চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনেক দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তিনি এ বিষয়টি প্রমাণ করেছেন।
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর জানান, এমপি বদি চাইলেই এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। উল্টো এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের অর্থ ও জনবল দিয়ে নানাভাবে সহযোগিতা করছেন। টেকনাফের ইউনিয়নগুলোতে আওয়ামী মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পরাজয় ঘটলে সেজন্য দলীয় এমপি আবদুর রহমান বদির কর্মকাণ্ডকে দায়ী করা হবে।
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাবেক এমপি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে জানান, এমপি বদি যেসব বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিরব সমর্থন দিচ্ছেন তাদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীও রয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, আসলে এমপি বদি দেরিতে হলেও হয়তো বা বুঝতে পেরেছেন আগামীতে আওয়ামী রাজনীতিতে তার দিন শেষ হয়ে আসছে। তাই তিনি আওয়ামী লীগের ছায়ায় থেকেই স্থানীয়ভাবে বিকল্প ‘রাজনৈতিক বলয়’ গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন।
কক্সবাজার জেলা আ’লীগ সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, এমপি বদির এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কথা কেন্দ্রীয় আ’লীগকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৬
টিটি/আইএসএ/টিসি