ফুলপুর, ময়মনসিংহ থেকে: ভোট শেষ হতে ঘণ্টাখানেকও বাকি নেই। কাঠফাটা দুপুরেও কেন্দ্রে কেন্দ্র ভোটারদের স্রোত।
ভ্যানে করেই বিনা খরচায় ভোটকেন্দ্রে এসেছেন শতবর্ষী চম্পাবতী। বাড়ি ফুলপুর উপজেলার দরাগপুর গ্রাম। স্থানীয় ৩ নম্বর ভাইটকান্দি ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আশরাফ উদ্দিনের (মোরগ) খরচায় ভোট দিতে এসেছেন তিনি।
ভোট দিলেন কেমন লাগলো, প্রশ্ন করতেই কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে চম্পাবতী বলেন, হাঁটার শক্তি নেই। প্রার্থীরা ভ্যান পাঠাইয়া ভোটকেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। ভালো প্রার্থীই পাস করবো।
চম্পাবতীকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন ভ্যানচালক সুজন মিয়া (৩৫)। তার ভ্যানে ভোটকেন্দ্রে এসেছেন জমিলা, ফেরদৌসিসহ আরও কয়েকজন। তাদের কোলে ৩ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশু সন্তান।
প্রার্থীর খরচায় ভোটকেন্দ্রে এলেন। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে নিতে সমস্যা হয়নি- এমন আলাপ তুলতেই সমস্বরে উত্তর দিলেন জমিলা ও ফেরদৌসি। ‘ভোট কারে দিছি এইডা শুধু আমরাই দেখছি। এইড্যা লইয়া কোন কতা (কথা) নাই। ’
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুরে স্থানীয় চকগজদর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ ভোটকেন্দ্রের সড়কের সামনেই আলাপ হচ্ছিলো তাদের সঙ্গে। এ ভোটকেন্দ্রে মিনিট বিশেক অবস্থান নিতেই দেখা গেলো এমন আরও কয়েকটি ভ্যান।
বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল আহাদের পক্ষের ভ্যানচালক মোবারক হোসেন। তার ভ্যানে ভোটারের সংখ্যা ছয়জন। কিছু জিজ্ঞাসা করতেই কথা ঘুরিয়ে মোবারক বললেন, ‘ফ্রি সার্ভিস দিচ্ছি। ’ বলেই দ্রুত চম্পট দিলেন। বুকপকেটে ব্যাজ।
এ দৃশ্য দেখে খানিক অদূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন শাহ আলম। তিনি ইউপি সদস্য প্রার্থী আশরাফ উদ্দিনের (মোরগ) হয়ে সকাল থেকেই ভ্যানে করে ভোটার আনার কাজ করছেন। এজন্য তিনি পাবেন ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা।
নিজেও স্বীকার করে বলেন, ‘মোরগ প্রতীকের প্রার্থী আমার মতো ৬ থেকে ৭ জন ভ্যান চালককে ভাড়া করেছে। হেগোরেই তো জিন্দাবাদ দিমু।
শাহ আলম এ পর্যন্ত ৩৫ জন ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন। আবার ভোট শেষে বাড়িতেও পৌঁছে দিচ্ছেন তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৬
এএ