ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘আগামী নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না খালেদা’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
‘আগামী নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না খালেদা’ ছবি : বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

ফরিদপুর: ২০১৯ সালের সংসদ নির্বাচনেও খালেদা জিয়ার অংশ নেওয়া হবে না। এ সময় তিনি তার করা দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে থাকবেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন।



মঙ্গলবার (২২ মার্চ) ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

দীর্ঘ ১১ বছর পর ফরিদপুর শহরের অম্বিকা হল ময়দানে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশারফুল ইসলাম এমপি। জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহার সভাপতিত্বে দিনব্যাপী সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি।

সৈয়দ আশরাফ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা ও সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ মাসুদ হোসেনের নাম ঘোষণা করেন।

নতুন সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বিদায়ী কমিটির সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
 
আশরাফ বলেন, দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে শীর্ষ দুই পদে দু’জনের নামের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে।

আগামীতে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সঠিক সময় সম্মেলন করতে হবে। তা না হলে সঠিক নেতৃত্ব হারিয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধান অতিথি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে কাজ করে যেতে হবে। নিজের মধ্যে হানাহানি নয়, ঐক্যবদ্ধ থেকে শেখ হাসিনার অশ্রুতে ভাসা নৌকাকে সচল রাখতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, খালেদা চেয়েছিলেন দেশকে ভিক্ষুকের দেশ বানাতে। তাই তারা উন্নয়ন সইতে পারেন না। উন্নয়নে বাধা দিতে তা এখনও ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, রাজাকারদের বিচার চলছে। তাই স্বাধীনতাবিরোধী খালেদা জিয়া পাকিস্তানের মদদে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে এদেশের সাধারণ মানুষকে খুন করছেন।

তিনি বলেন, এসব মানুষকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। যদি তাই না হতো, তবে কাউন্সিলে তারা এসব ঘটনার জন্য কোনো রকম অনুতপ্ততা, সমবেদনা বা ক্ষমা চাইলেন না কেন?

বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি ঘুমিয়ে গেছে, চিরতরে ঘুমিয়ে গেছে। তাইতো তাদের নেতা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি আবার জেগে উঠবে। কিন্তু তা আর কোনো দিনই হবে না। হরতাল-অবরোধের নামে পুড়িয়ে মানুষ মেরে কেউ রাজনীতিতে বেঁচে থাকতে পারে না।


বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. আব্দুর রহমান এমপি, এস এম কামাল হোসেন, হাবিবুর রহমান সিরাজ, সাইফুল আহাদ সেলিম ও সাবেক ছাত্রনেতা লিয়াকত সিকদার।

২০০৫ সালের ১৭ মে জেলার আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফরিদপুর জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক কাজী জায়নুল আবেদীন সভাপতি এবং ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান হাসিবুল হাসান লাবলু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।   সম্মেলনের প্রায় আটমাস পর গঠিত ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি। যদিও সেই কমিটিতে ভাঙ্গা উপজেলার ১৭ নেতা স্থান পাওয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

২০১০ সালের ২৪ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান লাবলুর মৃত্যুর পর দলের মধ্যে শুরু হয় সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে রাজনীতি। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে দল।

দীর্ঘ তিন বছরেও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পদটির সুরাহা না হওয়ায় দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ফরিদপুর সফরের তারিখ কয়েক দফা পরিবর্তন করেন। অবশেষে ২০১৩ সালের ১ জুন ঢাকায় গণভবনে ফরিদপুর জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে সভানেত্রীর মতবিনিময়ের পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ১নং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৬
আরকেবি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।