ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জাসদের ‘মশাল’ নিয়ে টানাটানি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
জাসদের ‘মশাল’ নিয়ে টানাটানি

ঢাকা: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) বিভক্ত দুই অংশই নিজেদের মূল জাসদ আখ্যা দিয়ে স্ব স্ব কমিটি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে এবার ২০০৮ সালে নিবন্ধন নেওয়া দলটির ‘মশাল’ প্রতীক নিয়ে টানাটানি শুরু হলো।



সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিদ্রোহী ঘোষণা করে দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া শরীফ নুরুল আম্বিয়া নেতৃত্বাধীন কমিটি সোমবার (২১ মার্চ) ইসিতে জাসদের নামে কেন্দ্রীয় কমিটির তালিকা ইসিতে পাঠিয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদের নামে আরেকটি কমিটির তালিকা জমা পড়েছে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ অনুযায়ী, কাউন্সিলের পর নির্বাচিত কমিটির তালিকা ইসিতে জমা দিতে হয়। সম্প্রতি জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে আম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি পক্ষ বিদ্রোহ ঘোষণা করে নিজেদেরই মূল জাসদ হিসেবে দাবি করে। যার ১০ দিনের মাথায় দলটির দু’টি অংশই নিজেদের মূল জাসদ হিসেবে ইসিতে কমিটির তালিকা দিলো। গত ১২ মার্চ জাসদের কাউন্সিল হয়েছিলো। পরদিন ১৩ মার্চ দুই পক্ষই আলাদা আলাদা কমিটি ঘোষণা করে।

এক্ষেত্রে শরীফ নুরুল আম্বিয়াকে সভাপতি ও সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি পক্ষ কমিটি গঠন করে। এই কমিটিতে কার্যকরী সভাপতি করা হয় মইনুদ্দিন খান বাদলকে। তিনি আগের কমিটিতে কার্যকরী সদস্য ছিলেন।

এদিকে অন্য পক্ষটি হাসানুল হক ইনুকে সভাপতি ও শিরীন আখতারকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি ঘোষণা করে।

ইসিতে দুটি কমিটিই নিজেদের জাসদ হিসেবে তালিকা জমা দেওয়ায় এবার শুরু হলো প্রতীক ‘মশাল’ নিয়ে আনুষ্ঠানিক টানাটানি। কারণ ইসিতে নিবন্ধিত ১৩ নম্বর দল হিসেবে জাসদের প্রতীক ‘মশাল’।

হাসানুল হক ইনুর পক্ষের ইসিতে পাঠানো তালিকার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১২ মার্চ কাউন্সিলের মাধ্যমে হাসানুল হক ইনু জাসদের সভাপতি ও শিরীন আখতার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

দলের কাউন্সিলে হাসানুল হক ইনু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে দুইজন প্রার্থী থাকায় গোপন ব্যালটে ভোট হয়েছে। এতে শিরীন আখতার ৬০৩ ও নাজমুল হক প্রধান ১৩৭ ভোট পান। ৭টি ভোট বাতিল হয়। সর্বোচ্চ ভোট পাওয়ায় শিরীন আখতার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।

চিঠিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রবিকউদ্দীন আহমদের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং অনুলিপি দেওয়া হয়েছে চার নির্বাচন কমিশনারকে।

এদিকে শরীফ নুরুল আম্বিয়া, নাজমুল হক প্রধান ও মইনুদ্দিন খান বাদল স্বাক্ষরিত কমিটির তালিকাও জমা পড়েছে ইসিতে। এই পক্ষ শিগগিরি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে তার তালিকাও জমা দেবে, জানিয়েছে ইসিকে।

একই ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিলো ২০০৮ সালে। সে সময় বিএনপির দু’টি অংশই নিজেদের ‘ধানের শীষ’ এর মূল ধারক হিসেবে দাবি করেছিলো। যদিও শেষ পর্যন্ত খালেদার পক্ষেই প্রতীকটি দিয়েছিলো নির্বাচন কমিশন।

সাত বছর পর ফের একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখী হতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে যাদের পক্ষে আগের কমিটির সদস্য বেশি থাকবে তাদের হাতেই যেতে পারে ‘মশাল’ এমনটিও মনে করছে সংস্থটির অনেক কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। এছাড়া বিরোধও উত্থাপন হয়নি। তাই যখন বিষয়টি সামনে আসবে, তখন আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
ইইউডি/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।