ঢাকা: সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখার দাবিতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বরাবের স্মারকলিপি দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
হেফাজতের ঢাকা মহানগর আহবায়ক নূর হোসেন কাসেমী স্মাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২ক- এ উল্লেখ রয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবে’।
‘দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বর্তমান রয়েছে। একবার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জ করে দায়েরকৃত রিট হাইকোর্টে খারিজ হয়ে যায়। ৯২ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম দেশের অধিকাংশ জনগণের চিন্তা চেতনা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন। সংবিধানে সন্নিবেশিত রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম- একটি সেটেল্ড বিষয়। কিন্তু সম্প্রতি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জ করে ২৮ বছর আগে দায়ের করা একটি রিট সচল করে শুনানির জন্যে হাইকোর্টের কার্যতালিকাভূক্ত করা হয়েছে। নতুন করে এ ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে আসার বিষয়টি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে’।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, এক সাগর রক্ত আর অসীম ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন যে, বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম হচ্ছে ইসলাম যা একান্ত বাস্তবতা। এ বাস্তবতাকে অস্বীকার করা বা পাশ কাটানোর কোনো সুযোগ নেই। আর জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি হচ্ছে সংবিধান। দেশে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির আলাদা ভাষা থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষের ভাষা বাংলা হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রভাষা যা সংবিধান স্বীকৃত। সুতরাং ৯২ শতাংশ জনগণের ধর্ম ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম যা আমাদের সংবিধানের যথার্থ ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে কারো কারো মাথাব্যথার বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’।
‘সুতরাং বাংলাদেশ বর্তমান সংবিধানের সংশোধন অযোগ্য প্রথমভাগের ২ক অনুচ্ছেদে বর্তমান রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে শুনানির জন্যে সচল রিটটি মোকাবেলার জন্যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের পক্ষে সরকারের আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ একান্ত জরুরি। আমরা আশা করি, সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিশ্বাস ও অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে রিটটি বাতিলে আদালতে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন’।
স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান হাশেমী, ফজলুর রহমান কাসেমীসহ কয়েকজন নেতা।
এর আগে একই দাবিতে রোববার (২৭ মার্চ) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে স্মারকলিপি দেয় হেফাজতে ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৬
ইএস/এএসআর