ঢাকা: চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) রাতে রাজধানীর বারিধারার নিজ বাসভবনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- দলের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. অধ্যাপক আবু মোজাফফর আহাম্মেদ প্রমুখ।
বি চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র নিয়ে কী বলব এখন রাজনৈতিক বিষয়ে যত কম বলা যায় তত ভাল। কোনো মিটিং হয় না। মিছিল করলে গুলি করা হয়। কর্মীরা গায়েব হয়ে যায়। দেশ এভাবে চলতে পারে না।
সরকারকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলতে চাই, তাদের বুঝতে হবে সমস্যা কোথায়। শুধুমাত্র দলকে চালিয়ে নিলেই হবে না। দেশটাও চালাতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন ভোটের আতংকের মধ্যে আছে। আগে ভোটের আগে থাকতো উৎসব মুখরতা এখন এর উল্টো। ভোটের আগে থেকে মানুষের মনে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের বিষয়ে সরকারের দ্বিধাদ্বন্ধের সমালোচনা করে বলেন, আদালত সরকারের দুই মন্ত্রীকে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে সাজা দিলেও সরকার এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমার এও মনে হয়, এই দুই মন্ত্রীও পদত্যাগ করবেন না। কারণ, তাদের দুই কানই কাটা গেছে।
তিনি বলেন, সারা দেশে সামাজিক অবক্ষয় চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে এবং একে রুখতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রথমে সরকারকেই দাঁড়াতেই হবে বলে মনে করেন।
তার ভাষ্য, আজকে ছোটছোট ছেলেমেয়েরা খুন হয়ে যাচ্ছে, গুম হয়ে যাচ্ছে, তনুর মতো মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হয়ে খুন হচ্ছে। এগুলো আগে ছিল না। মেয়েদের শ্লীলতাহানী করা হচ্ছে।
আয় উপার্জন বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বি চৌধুরী বলেন, ডলার ইনকাম বেড়েছে কিন্তু এটা একটা ব্লাফ। মাথাপিছু ইনকাম বেড়েছে সমাজের গুটি কয়েক মানুষের জন্য, সাধারণ মানুষের জন্য নয়। শিক্ষার মান নিম্নগামী হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার মান ও স্থিতিশীলতা না থাকায় কিছু বিত্তবান লোক তাদের সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়ে দেয়।
শেয়ার মার্কেট ধ্বসের বিষয়ে বলেন, শেয়ার মার্কেটে হাজার যুবক তাদের পুঁজি হারিয়েছে। মনোবল হারিয়েছে। আর অর্থমন্ত্রী বলেন, শেয়ার মার্কেট ছেড়ে দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরি হয়ে যায়। এতেও অর্থমন্ত্রী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। কিন্তু গভর্নর ভদ্রলোককের সন্তান দেখে পদত্যাগ করেছেন।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বিষয়ে বি. চৌধুরী বলেন, চাল ডাল, বাস ভাড়া, ট্যাক্সি ভাড়া বেড়েছে জনগণের আয় বাড়েনি। এটা কি অর্থনৈতিক অগ্রগতি। নতুন কেউ শিল্প বিনিয়োগে এগিয়ে আসছেন না। কিছু লোক আঙুল ফুলে তালগাছ হয়ে গেছে। এসবের বিরুদ্ধে মানুষকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে বি চৌধুরী বলেন, হাল ছাড়া যাবে না। এখন সবাই বিপদে আছে। দেশকে বাঁচাতে হলে সরকারের কাঁধে দায়িত্ব ছেড়ে দিলে চলবে না। বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তিনি বলেন, আপনারও দেশের কথা ভাবুন। জনগণকে বলুন সংহত হতে।
বাংলাদেশ সময়: ০২০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
এমএম/বিএস