ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘বিএনপি ছিল দেশের ফকির সরকার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
‘বিএনপি ছিল দেশের ফকির সরকার’ ছবি : শাকিল-বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

ঢাকা: অতীতের বিএনপি সরকারকে ‘ফকির সরকার’ আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘ফকির কাহাকে বলে কত প্রকার এবং কি কি ? উদাহরণ দিয়ে বুঝাইয়া দেয়া যায়, তার নাম হল বিএনপি এবং বিএনপির সরকার।

কারণ এরা যেখানেই পারে ফুটা থালা নিয়ে বইসা যায়, আর ভিক্ষা চায়। এই হল বিএনপি, এই হল তাদের সরকারের চরিত্র। ’

বিদেশ থেকে যা সাহায্য আসতো সেটাও বিএনপি ‘চুরি ও ভাগ বাটোয়ারা’ করেছে বলেও মন্তব্য করেন কৃষিমন্ত্রী।

বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত ‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস’ উপলক্ষে  আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের শুরুর অবস্থা তুলে ধরে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘কোন দেশে কোন কিছুর দাম বাড়লে আর কমে না। তখন আমাদের একটি যুদ্ধ বিধস্ত দেশ। সেদিন দেখেছি বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শুধু বাংলার কৃষকই নয়, সমস্ত মানুষ জিনিসপত্র থেকে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমিয়ে এনেছিল। আজকে তারই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখনই সরকার গঠন করে তখনই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। ’

আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত শাসনামল তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করে কৃষি উপকরণ কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। ফলাফল পাওয়া গেছে ১৯৯৮ সালের বন্যায়। আমি সেই সময় কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী ছিলাম। সেই বন্যার পানি ২৩ দিন লেগেছে নরমাল লেভেলে (স্বাভাবিক অবস্থায়) আসতে। কিন্তু সেই সময় শেখ হাসিনার সরকার এক নাগাড়ে ছয় মাস ২০ কেজি চাল, ২০ কেজি গম গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে দিয়েছে। শহরেও ওএমএস চালু করেছিল। কারণ বন্যা নিয়ে বিবিসির ভবিষ্যদ্বাণী ছিল ১৯৯৮ সালের বন্যায় দুই কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। দুই কোটি মানুষ তো দূরে থাক, দুইটা পিঁপড়াও না খেয়ে মারা যায়নি। ‘

‘এরই নাম নেতৃত্ব। এরই নাম বঙ্গবন্ধু কন্যা’ উল্লেখ করে কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষক লীগকে বঙ্গবন্ধু গড়ে তুলে গিয়েছিলেন। এরপর জননেত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে ১৯৯৮ সালের বন্যায় মাথায় করে কৃষকের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছিল সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কিন্তু যেই আমরা ২০০১ সালে বিদায় নিলাম, দেশে আবার সেই খাদ্য ঘাটতি দেখা দিল। মানুষের একটু চক্ষু লজ্জা থাকে। কিন্তু বিএনপির সেটাও নাই। ’

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘তৎকালীন অর্থমন্ত্রী (সাইফুর রহমান), তিনি মারা গেছেন। তার সম্পর্কে আমি কোন কটু কথা বলব না। তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে বললেন, খাদ্য ঘাটতি থাকা ভাল। তাহলে বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যায়। ’

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই না, খাদ্যে উদ্বৃত্ত থাকছে দাবি করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শ্রীলংকাতে চাল রপ্তানি করছি। আমরা নেপালে  ভূমিকম্পের সময় সাহায্য ও সহানুভূতির নিদর্শন হিসেবে চাল পাঠিয়েছি। এখন ১৫ হাজার টন পোলাওয়ের চাল বেসরকারি খাতে রপ্তানি হচ্ছে। অনবরত আমাদের চাল রপ্তানি হচ্ছে। ’

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা আউশে কৃষককে প্রণোদনা দিয়েছি। কারণ বোরো করতে অসম্ভব পরিমাণ পানি প্রয়োজন হয়। এক কেজি চাল করতে তিন হাজার দুইশ’ লিটার পানি লাগে। উত্তরবঙ্গেও উঁচু স্থানে এত পরিমাণ পানি দেয়া সম্ভব না। আমরা চাই বোরো হবে নিম্নাঞ্চলে। আর আউশ আমাদের চিরায়ত ফসল। এই ফসলের উন্নত ভেরাইটি আমরা আবিষ্কার করব। সেটা কৃষকের হাতে দেব। কাজেই আউশের উৎপাদন যদি বাড়ে, আর আমন যদি আরও উন্নত হয় তাহলে বোরোর উপরে চাপ কমবে বলে মনে করে তিনি।

কৃষিমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যতই আমরা আমাদের খাদ্য পণ্যে বিদেশ নির্ভরতা কমাতে পারব। আমরা সেই টাকা কৃষির জন্য, কৃষকের জন্য দিতে পারব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শুধু উপকরণ দিচ্ছেন তা না, পাশাপাশি কৃষি গবেষণার জন্য বৈজ্ঞানিকরা যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনে যে টাকা দরকার, সেটা দিতেও তিনি প্রস্তুত আছেন। ’

বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার সামসুল হক রেজা, বিশ্বনাথ সরকার বিটু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
টিএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।