ফরিদপুর: উৎসবমুখর পরিবেশে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শেষ করলেও শেষ মুহূর্তে নির্বাচন বর্জন করেছেন বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। তবে নানা অভিযোগ থাকলেও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা, পাচুরিয়া ও টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি এমনটাই। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ওই তিন ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বানা, পাচুরিয়া ও টগরবন্দ- এ তিনটি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ১৮ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ২৬ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৯৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে তিন ইউপির ৯টি করে ২৭টি ওয়ার্ডের ২৭টি ভোটকেন্দ্রের ১১০টি কক্ষে ৩৭ হাজার ৩৮৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
এর মধ্যে বানা ইউপির ভোটার ১২ হাজার ২৭৩ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ২৮ জন ও নারী ভোটার ৬ হাজার ৪৩ জন। পাচুরিয়া ইউপির ১১ হাজার ৩৬৪ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ৫৭৫ জন ও নারী ৫ হাজার ৭৮৯ জন। টগরবন্দ ইউপির ১৩ হাজার ৭৫১ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৭৩৯ জন ও নারী ৭ হাজার ১২ জন।
নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী এরই মধ্যে প্রার্থীরা তাদের প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে দীর্ঘ এক মাস দিন-রাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। নানা প্রতিশ্রুতির জোয়ারে ভাসিয়ে ভোটারদের নজর কেড়ে ভোটভিক্ষা করেছেন।
তবে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে এসে তিনটি ইউপিরই বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছেন। টগরবন্দ ইউপির মো. সাজ্জাদ হোসেন সুজন, বানা ইউপির মো. মার্জন ও পাচুরিয়া ইউপির শাহিদুর রহমান পান্নু মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জন করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুস সালাম অভিযোগ করেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ধানের শীষের প্রার্থীদের ভয়-ভীতি এবং প্রচার-প্রচারণায় বাধার সৃষ্টি করছেন। নির্বাচন থেকে সরে না গেলে মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় বাধা দেওয়া এবং ভোট কারচুপি করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই বলে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির তিন প্রার্থী ছাড়াও স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ তিন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এখন আওয়ামী লীগের নৌকার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ প্রার্থীরাই। চলমান দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে উপজেলার ছয়টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ করার কথা থাকলেও আলফাডাঙ্গাকে নতুন পৌরসভা ঘোষণা করায় তিনটি ইউপির নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
বিএনপির প্রার্থী ছাড়াও টগরবন্দ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মুন্সি মিজানুর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির মো. রুহুল আমিন ভুঁইয়া লাঙ্গল, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ সাহিদুজ্জামান আনারস এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমাম হাসান শিপন চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বানা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাদী হুমায়ুন কবির বাবু নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হারুন অর রশীদ শরীফ চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউপির অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল কাদের গত ১৮ মার্চ জনসভায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে সর্মথন দিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন।
পাচুড়িয়া ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের এস এম মিজানুর রহমান নৌকা, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী খালিদ মোশারেফ রঞ্জু মোটরসাইকেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোমিনুর রহমান টেলিফোন, আল মামুন মিয়া আনারস ও মো. সাইফুর রহমান সাইফার চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
আরকেবি/এএসআর